এসএম সুরুজ আলী ॥ বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর ও ইকরাম গ্রামের দুই বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ৩ ডাকাতকে গ্রেফতার ও লুন্ঠিত মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে লাখাই’র বুল্লা এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা হলো- সিলেটের কানাইঘাট থানার চতুল গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের পুত্র এনামুল হক এনাম, জৈন্তাপুর থানার নোয়াবাগান এলাকার রইছ উল্লার পুত্র আকলাছ মিয়া ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আউশপাড়া গ্রামের কুদ্দুছ মিয়ার পুত্র উজ্জল মিয়া ওরফে সুমন। এর মধ্যে এনামুল হক এনাম আদালতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল রবিবার গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর হাইস্কুল সংলগ্ন শানু মিয়ার বাড়িতে ও ইকরাম গ্রামের কালা মিয়ার বাড়িতে গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা প্রবেশ করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় উভয় পরিবারের সদস্যরা ডাকাতদের হামলায় আহত হয়। উত্তর সাঙ্গর গ্রামের বাসিন্দা শানু মিয়া জানান, তার বাড়িতে শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ১০/১২ ডাকাত প্রবেশ করে। এর মধ্যে ৪/৫জন ডাকাত মুখোশধারী ছিল। ডাকাতরা তার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে পরিবারের লোকজনকে মারধর এবং ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আতংক সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তার পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে ৩টি মোবাইল ফোন, ৩ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৬০ হাজার টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতদের হামলায় শানু মিয়ার ভাই হাফেজ আব্দুল মতিন ও মোস্তফা মিয়া আহত হয়। আহত অবস্থায় তাদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। একই রাতে ইকরাম গ্রামের কালা মিয়ার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
শানু মিয়া জানান, পরদিন সকালে ডাকাতরা নিয়ে যাওয়া মোবাইলে ফোন করলে একজন ডাকাত ফোন রিসিভ করে জানায় বহুলা গ্রাম থেকে ফোনটি পুলিশ উদ্ধার করেছে আপনারা এসে নিয়ে যান। পরবর্তীতে সুজাতপুর ফাঁড়ির পুলিশের কাছে গেলে পুলিশ ফোন করে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান। এ সময় পুলিশ মোবাইল ট্রেকিং করে নিশ্চিত হয় ডাকাতরা বুল্লা এলাকায় অবস্থান করছে। পরবর্তীতে বিষয়টি লাখাই থানাকে অবগত করলে ওসি মোঃ সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এ সময় আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়। পরে গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের বানিয়াচং থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সুজাতপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মঈন উদ্দিন সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত ডাকাতসহ বিভিন্ন স্থানের আরো কয়েকজন ডাকাত উত্তর সাঙ্গরের শানু মিয়া ও ইকরামের কালা মিয়ার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত। তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অব্যাহত অভিযান পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে এনামুল হক এনামের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সে আন্তঃজেলা ডাকাত।
গতকাল সে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ রঞ্জন সামন্ত জানান, উত্তর সাঙ্গর ও ইকরাম গ্রামে ২টি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ডাকাতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
মোবাইল ট্রেকিং করে ডাকাতদের অবস্থান নিশ্চিত হয় পুলিশ
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com