স্টাফ রিপোর্টার ॥ লাখাই উপজেলার সিংহগ্রামে অবৈধ উপায়ে আরএস রেকর্ড সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে। রেকর্ড সংশোধনে সিংহগ্রামের মৃত আলী আবদরের কন্যা নবাহার ও নুরজাহানকে প্রধান বিবাদী ও মোঃ শামছু মিয়া, মোঃ শাহজাহান মিয়া ও মোঃ শফিকুল ইসলামকে মোকাবিলা বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন একই গ্রামের মৃত মুগাই মিয়ার পুত্র মলাই ময়া ও নাছির মিয়া।
মামলায় উল্লেখ করা হয়- লাখাই উপজেলার সিংহগ্রাম মৌজার জে.এল নং এস.এ ৩৯, আর.এস জে.এল নং- ৪০, এস.এ খতিয়ান নং- ৪০৭, ২৬০৮, ৩০৮, আর.এস খতিয়ান নং- ২০২২, এস.এ দাগ নং- ১৮৫০, ১৮৫১, ১৮৫২, ১৮৫৩, আর.এস দাগ নং- ২০৫৭, পরিমাণ ১.২৬ একর আমন হালে ফিসারী রকম ভূমির এস.এ রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন ওয়াতি উল্লা, ফুরকান উল্লা, শেখ বারিক। উক্ত এস.এ রেকর্ডীয় মালিকগণ নি¤œ তপশীল বর্ণিত ভূমি ভোগদখল করতে থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তাদের ত্যজ্যবিত্তে তাদের ওয়ারিশানগণ তিতু মিয়া, সাজু মিয়া ও জয়তুন বিবি, দুদু মিয়া মালিক দখলকার হন। পরবর্তীতে এস.এ রেকর্ডীয় মালিকের ওয়ারিশানগণ নালিশা তপশীল বর্ণিত ভূমি বিক্রি করার প্রস্তাব করলে বিভিন্ন তারিখে ও বিভিন্ন রেজিঃ দলিলে আলী আবদরের নিকট বিক্রি করেন। আলী আবদর নালিশা বর্ণিত ভূমি খরিদাসূত্রে স্বত্ত্ববান দখলদার হয়ে অপরাপর ভূমিসহ নালিশা ভূমিতে সময় উপযোগী ফসল ফলিয়ে আসতে থাকাবস্থায় কন্যা নবাহার ও নুর জাহান এবং পুত্র মোঃ শামছু মিয়া, মোঃ শাহজাহান মিয়া ও মোঃ শফিকুল ইসলামকে উত্তরাধিকারী ওয়ারিশান রেখে মারা যান। পরে আলী আবদরের ওয়ারিশানগণ তাদের অপরাপর ভূমিসহ নালিশা তপশীল বর্ণিত ভূমিতে ভোগদখল থাকাবস্থায় পারিবারিক আপোষ বিল্লয় বাটোয়ারা হলে মোঃ শামছু মিয়া, মোঃ শাহজাহান মিয়া ও মোঃ শফিকুল ইসলাম নালিশা ভূমি ছাহামপ্রাপ্ত হন। ছাহামপ্রাপ্ত হওয়ার পর তারা নালিশা ভূমিতে সময় উপযোগী ধান ফসল-ফসলাদি ফলিয়ে নিজে ভোগ দখল করার পর অতিরিক্ত ফসল বিক্রি করে সর্ব প্রকার স্বত্ত্বগ্রাহী হয়ে আসতে থাকাবস্থায় তাদের টাকার বিশেষ প্রয়োজন হলে তারা উক্ত ভূমি বিক্রি করার জন্য প্রচার করলে নাছির মিয়া ও নুরজাহান বিবি ভূমি খরিদ করতে ইচ্ছা পোষণ করেন। মোঃ শামছু মিয়া, মোঃ শাহজাহান মিয়া ও মোঃ শফিকুল ইসলাম ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর আন-রেজিস্ট্রারি দলিলমূলে তাদের ভূমি বিক্রি করে স্বত্ত্ব ও দখল ত্যাগী হন। পরে নাছির মিয়া ও নুরজাহান বিবি নালিশা তপশীল বর্ণিত ভূমি ভোগদখল করতে থাকাবস্থায় নুরজাহান বিবি তার খরিদা ভূমি বিক্রি করতে প্রচার করলে মলাই মিয়া ও নাছির মিয়া তা খরিদ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করলে তৎকালীন সর্বোচ্চ বাজারমূল্যে নাছির মিয়া ও নুরজাহান বিবি তা বিক্রি করে সকল প্রকার স্বত্ত্ব ও দখল ত্যাগী হন। মলাই মিয়া ও নাছির মিয়া তাদের ক্রয়কৃত ভূমিতে ধান্য ফসলাদি ফলিয়ে নিজেদের খাওয়ার পর অতিরিক্ত বিক্রি করে সকল প্রকার স্বত্ত্বগ্রাহী হয়ে আসতে থাকেন এবং বর্তমানেও ওই ভূমিতে তারা ভোগ দখলদার রয়েছেন। ইদানিং এলাকায় আর.এস প্রিন্ট পর্চা প্রকাশ হলে মলাই মিয়া ও নাছির মিয়া আর.এস পর্চা উত্তোলন করে দেখতে পান আর.এস ৩০৮নং খতিয়ানে আর.এস ৩০৫৭নং দাগে ১.২৬ একর আমন রকম ভূমি মামলার বিবাদীগণের পিতা আলী আবদরের নামে অবৈধভাবে আর.এস রেকর্ড করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে মলাই মিয়া ও নাছির মিয়া রেকর্ড সংশোধন করে দেয়ার জন্য নবাহার ও নুরজাহান বিবিকে তাগাদা দিলে তারা রেকর্ড সংশোধন করে দেই দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। এদিকে মোঃ শামছু মিয়া, মোঃ শাহজাহান মিয়া ও মোঃ শফিকুল ইসলাম লাখাইর সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মলাই মিয়া ও নাছির মিয়ার স্বত্ত্ব দখলীয় ভূমি হিসেবে তাদের নামে নামজারি করাতে সহায়তা করেন এবং মলাই মিয়া ও নাছির মিয়ার নামে ১৬৩১/১৭-১৮নং নামজারি মোকদ্দমা মূলে নামজারি করে ১৪২৯ বাংলা পর্যন্ত সরকারি খাজনাদি পরিশোধ করেন। কিন্তু নবাহার ও নুর জাহান অবৈধ উপায়ে আরএস রেকর্ড সম্পন্ন করায় মলাই মিয়া ও নাছির মিয়ার স্বত্ত্বে মলিনতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় তারা নবাহার, নুর জাহান, মোঃ শামছু মিয়া, মোঃ শাহজাহান মিয়া ও মোঃ শফিকুল ইসলামের পিতা আলী আবদরের নামে হওয়া আর.এস রেকর্ড সংশোধনের জন্য সহকারি জজ আদালত লাখাই-এ স্বত্ত্ব মোকদ্দমা দায়ের করেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com