স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। হত্যার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি এই মামলার বিচার কাজ। বরং সাক্ষীদের হাজির করতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে মামলার কার্যক্রম।
কয়েকদফা পেছানোর পর হত্যার ১৬ বছর পূর্তির দিনে এই মামলার ৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহরিয়ার কবির আগামী ৩ মার্চ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন।
সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের সরকারি কৌঁশলি সরওয়ার চৌধুরী আবদাল জানান, বুধবার আসামিদের উপস্থিতিতে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. মো আব্দুল্লাহসহ চার জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্য প্রদানকারী অন্যরা হলেন- ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রহমত আলী, আব্দুল মতিন ও ইমান আলী। এ নিয়ে ওই মামলায় মোট ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলো।
সাক্ষ্য গ্রহণকালে মামলার আসামির মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগী মেয়র জি কে গউছসহ ১৯ আসামি সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালর ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ ৫ জন।
এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা তিন দফায় তদন্ত করে সিআইডি। প্রথমদফায় ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেন বাদী মজিদ খান। পরে ২০০৭ সালে মামলাটি পুনঃ তদন্তের জন্য ফের সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ২০১১ সালের ২০ জুন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নানসহ ২৪ জনকে আসামি করে অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১১ সালের ২৮ জুন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া এই অভিযোগপত্রের উপরও না-রাজি আবেদন করেন।
সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর সিআইডি সিলেট রেঞ্জের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন নেছা পারুল সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তবে নানা কারণে এই আদালতেও পিছিয়ে যাচ্ছে মামলার কার্যক্রম।