ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবিগঞ্জ শহরকে
সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বললেন, অতীতে কখনো এমন কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেনি। চোরেরা কৌশল পরিবর্তন করে যে কায়দায় চুরি করেছে, তাতে তারা অতি সহজেই যে কোন দোকানে চুরি করতে পারবে ॥ ব্যকস সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা শহরে রাতে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি এবং স্বাবলম্বী সকল ব্যবসায়ীকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর আহবান জানালেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে। আর এতে ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। চুরি প্রতিরোধে পুলিশী টহল জোরদারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শহরের দক্ষিণ শ্যামলী এলাকার রাফি ভ্যারাইটিজ স্টোর, বদিউজ্জামান খান রোডের স্বস্থি টেলিকম ও কালীবাড়ি ক্রস রোডের স্বদেশ টি হাউজ এন্ড ভেরাইটিজ স্টোরে চুরির ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দেয় চোর আতঙ্ক। বিশেষ করে চুরির ধরণ দেখে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষণিক ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ব্যকস) হবিগঞ্জের সভাপতি মোঃ শামছুল হুদাকে অবগত করলে তিনি পর্যায়ক্রমে প্রতিটি চুরির ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বিষয়টি হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশকে অবগত করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম, ওসি তদন্ত দৌস মোহাম্মদসহ পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। চুরির ধরণ পুলিশ প্রশাসনকেও ভাবিতে তুলেছে। তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম ব্যকস নেতৃবৃন্দকে নিয়ে করণীয় নির্ধারণে মতবিনিময়ে বসেন। গতকাল বেলা প্রায় ২টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ সদর সার্কেল এর অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী, ব্যকস সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীরসহ ব্যকস নেতৃবৃন্দ এবং পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, শহরের কোথাও চুরির ঘটনা ঘটলে আমরা এটি নিজেদের ব্যর্থতা বলে মনে করি। গতকাল সংঘটিত চুরির ঘটনাগুলো পরিদর্শন ও চুরির আলামত প্রত্যক্ষ করে তা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। অতীতে কখনো এভাবে এমন কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেনি। চোরেরা তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। যে কায়দায় চুরি করেছে, সে কায়দায় তারা অতি সহজেই যে কোন দোকানে চুরি সংঘটিত করতে পারবে। তাই প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে আরও বেশি মাত্রায় সচেতন হতে হবে। নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। এলাকাভিত্তিক পাহারাদারের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি উপস্থিত ব্যকস নেতৃবৃন্দকে চিহ্নিত চোরদের তালিকা তৈরী করে তা পুলিশকে দেয়ার অনুরোধ জানান। তাছাড়া মতবিনিময় সভায় এলাকাভিত্তিক ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করে করণীয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা লাগানো প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে সকল ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বসে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ব্যক্স) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর বলেন, শহরে একের পর এক চুরির ঘটনা ব্যবসায়ীদের ভাবিয়ে তুলেছে। ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। প্রত্যেক ব্যবসায়ীই নিজেদের আমানত রক্ষায় সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করছেন। তার পরও কোন না কোন দোকানে চুরির ঘটনা ঘটছে। ব্যবসায়ীদেরকে-তো রাতে বাসায় ফেরার সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল সাথে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই ব্যবসায়ীরা চাইলেও চুরি রোধ করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকেই আন্তরিক হতে হবে। চিহ্নিত চোরদের গ্রেফতার করে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুঁজে বের করতে হবে চোরাই মালামাল তারা কোথায় নিয়ে বিক্রি করে। পরে তাদের তথ্য যাচাই করে চোরাই মালামাল ক্রেতাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। তবেই চুরি রোধ করাসহ চোরাই মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি বেশ কিছু চুরির ঘটনা ঘটলেও আজ পর্যন্ত পুলিশ চোরাই মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। আর চোরেরা হচ্ছে উৎসাহিত।
নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রশ্নে তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজেদেরকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগাতে উদ্বুদ্ব করতে হবে। বিশেষ করে দোকানের ভিতরে এবং বাইরে সিসি টিভি ক্যামেরা থাকলে কিছুটা হলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে তিনি মনে করেন। পাশাপাশি তিনি রাত ১০টার পর শহরে চলাচলকারী রিকশা ও টমটমকে একটি আইনী কাঠামোতে নিয়ে আসার আহবান জানান। তিনি মনে করেন রাতে যে সকল রিকশা বা টমটম শহরে চলাচল করবে পুলিশ প্রশাসন বা পৌরসভার মাধ্যমে যদি তাদের সনাক্ত করা হয় বা পুলিশ প্রশাসন থেকে পূর্বানুমতি দেয়া হয় এবং তাদের আলাদা পোষাক দেয়া হয় তাহলে তারা একটি আইনী কাঠামোতে চলে আসবে। পোষাক দেখেই তাদের চিহ্নিত করা এমনকি টহল পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের পরিচয়পত্র যাচাই করা হলে চুরির ঘটনা অনেক কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
শহরের সিনেমাহল রোডের ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল হান্নান চুরি প্রতিরোধে চিহ্নিত চোরদের গ্রেফতারের দাবি জানান। তিনি মনে করেন, চিহ্নিত চোরদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তাদের সহযোগিদের নাম পাওয়া যাবে। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই করে অন্যান্যদের আইনের আওতায় আনা সহজ হবে।
শহরের প্রধান ডাকঘর এলাকাস্থ পৌর মার্কেটের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী মোঃ ফারুক মিয়া বলেন, প্রশাসন ইচ্ছে করলেই চুরি রোধ করা সম্ভব। পাবলিকের পক্ষে শত চেষ্টা করেও তা সম্ভব নয়। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকঘর এলাকার মসজিদের মোটর চোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে। শহরের টাউন হল রোডস্থ রওশন রেজা এম্পায়ার-এ তার একটি মোবাইল ফোনের দোকান ছিল। ওই দোকানটি তার পুত্র পরিচালনা করতো। হঠাৎই এক রাতে দোকানে রহস্যজনক চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। ব্যবসায়ীরা এ চুরির ঘটনায় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত চুরির রহস্য উদঘাটন, চোরাই মালামাল উদ্ধার কিংবা কোন চোরকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ওই চুরির ঘটনায় তিনি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হন। ঋণগ্রস্ত হয়ে পরে তিনি ওই দোকানটিই ছেড়ে দেন। তাই তিনি চুরি প্রতিরোধে পুলিশী টহল বৃদ্ধির দাবি জানান। পাশাপাশি চিহ্নিত চোরদের আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের সহযোগিদেরও গ্রেফতারের দাবি জানান। তাছাড়া রাতে অপরিচিত লোকজন পেলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য টহল পুলিশের প্রতি আহবান জানান তিনি।
ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ব্যকস) হবিগঞ্জের সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা বলেন, শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে চোরের উপদ্রব বেড়ে যায়। শহরে একের পর এক চুরির ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এখন পর্যন্ত যত চুরির ঘটনা ঘটেছে পুলিশ একটি চুরির ঘটনারও চোরাই মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি। উল্লেখযোগ্য কোন চিহ্নিত চোর গ্রেফতার হয়নি। তিনি শহরে চুরি রোধে চিহ্নিত চোরদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। পাশাপাশি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের সহযোগিদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। তাছাড়া শহরে রাতে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধিসহ স্বাবলম্বী সকল ব্যবসায়ীকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর আহবান জানান তিনি।
হবিগঞ্জ মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শহরে একের পর এক চুরির ঘটনা ব্যবসায়ীদের ভাবিয়ে তুলেছে। চুরি প্রতিরোধে তিনি পুলিশী টহল বৃদ্ধিসহ চিহ্নিত চোরদের অতি দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। পাশাপাশি শহরের উল্লেখযোগ্য মার্কেট সমূহে পাহারাদার আছে কি না, যে সকল স্থানে পাহারাদার আছে তারা সজাগ আছে কি না বা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কি না তা মনিটরিং করার দাবি জানান। তাছাড়া সম্প্রতি তার মালিকানাধীন শহরের কালীবাড়ি এলাকাস্থ লন্ডন টাওয়ারে অবস্থিত ইজি ফ্যাশনে দেয়াল ভেঙ্গে চুরির ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত এর কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান তিনি। তাছাড়া বড় বড় মার্কেট এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের তাদের প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর সামর্থ্য থাকলেও যাদের সে সামথ্য নেই তাদের বিষয়টিকে মাথায় নিয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি জানান, আমরা খবর পাওয়ার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চুরির আলামত প্রত্যক্ষ করেছি। মঙ্গলবার রাতে চুরির ঘটনায় চুরি রোধে করণীয় নির্ধারণে বুধবার বেলা ২টায় ব্যকস নেতৃবৃন্দকে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম মতবিনিময় করেন। এ সময় চুরি রোধে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়। চুরি রোধে টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি এখন থেকে প্রতি রাতে পুলিশের স্পেশাল টিম সারা শহর টহল দেবে এবং নিয়মিত টহল ব্যবস্থা মনিটরিং করবে। যে সব এলাকায় পাহারাদার কম সে এলাকায় পাহারাদার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাছাড়া এখন থেকে বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীসহ সকল স্তরের লোকজনকে নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা করা হবে। চিহ্নিত চোরদের তালিকা তৈরী করে তা যাচাই বাছাই করে তাদের আইনের আওতায় আনতে বুধবার রাত থেকেই অভিযান পরিচালনা করবে পুলিশের স্পেশাল টিম।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শহরের দক্ষিণ শ্যামলী এলাকার রাফি ভ্যারাইটিজ স্টোর নামে একটি মুদি দোকানে চুরি সংঘটিত হয়। চোরেরা অভিনব কায়দায় দোকানের শার্টার বাঁকিয়ে চুরি সংঘটিত করেছে। সকালে মালিক দোকান খুলতে গিয়ে চুরির ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। দোকান মালিকের ভাষ্য অনুযায়ী, সাধারণত রাতে তিনি দোকানে নগদ টাকা রাখেন না। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য টাকা দোকানেই রেখে গিয়েছিলেন। চোর সে টাকা নিয়ে গেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে, তাঁর কাছে এ ক্ষতি অনেক। খবর পেয়ে ব্যকস সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাছাড়া একই রাতে বদিউজ্জামান খান রোডে স্বস্তি টেলিকম ও কালীবাড়ি ক্রস রোডে স্বদেশ টি হাউজ এন্ড ভেরাইটিজ স্টোরে চুরি সংঘটিত হয়।
গত শনিবার দিবাগত রাতে শহরের পিটিআই রোডের মেসার্স অপূর্ব ভেরাইটিজ স্টোরে চুরি সংঘটিত হয়। চোরেরা দোকানের সার্টার ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল নিয়ে যায়। ওই দোকানের মালিক ঝন্টু দাশ জানান, ওই দিন রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় যান। সকালে এসে দেখেন দোকানের দরজা খোলা। খবর পেয়ে ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ব্যকস হবিগঞ্জের সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা ও সদর থানার এসআই রহিমসহ পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
একদিনের ব্যবধানে শহরে আরো একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়। রবিবার রাতে সংঘবদ্ধ চোরেরা শায়েস্তানগর টাউন মসজিদ মার্কেটের তালুকদার মটরসের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। চোরেরা ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৯ লাখ টাকা মূল্যের টায়ার ও ব্যাটারিসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়।
তালুকদার মটরস এর মালিক ইদুল মিয়া জানান, প্রতিদিনের মত গত ১৭ জানুয়ারি রবিবার রাত ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। পরদিন সোমবার সকাল ৯টায় দোকান খুলতে এসে দেখেন শার্টারের তালা ভাঙ্গা। পরে দোকানের ভিতরে ঢুকে দেখতে পান দোকানে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র টায়ার, ব্যাটারি ও দোকানের ক্যাশ বাক্সে থাকা প্রায় ১০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে চোরেরা। দোকান মালিক জানান, চোরেরা দোকান থেকে যেসব জিনিস নিয়ে গেছে সেগুলো হচ্ছে- বিভিন্ন মডেলের ব্যাটারি ৭৯টি যার মূল্য ৪ লাখ ৮৪ হাজার ২৫০ টাকা, বিভিন্ন মডেলের টায়ার ১২২টি যার মূল্য ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯শ’ টাকা, বিভিন্ন মডেলের আইপিএস মেশিন ৫টি যার মূল্য ৬৭ হাজার ৭শ’ টাকা ও ১০ কার্টুন মবিল যার মূল্য ৯৬ হাজার টাকা।