স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধবপুরের আলোচিত সাহেদা হত্যা মামলার প্রধান আসামী আহাম্মদকে (২৫) সিলেট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন (সিআইডি) ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সিলেট শাহজালাল মাজার গেইট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আহাম্মদ উপজেলার খড়কী গ্রামের ইউনুছ আলীর পুত্র। সে পেশায় ফার্নিচারের নকশা মিস্ত্রি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খড়কী গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর কন্যা সাহেদা আক্তারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে আহাম্মদের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। সাহেদা সম্পর্কে আহাম্মদের দাদী হলেও এ সম্পর্ক তাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এক পর্যায়ে সাহেদা ২ মাসের অন্তঃসত্ত্ব¡া হয়ে পড়লে আহাম্মদকে সে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। আহাম্মদ তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। বিষয়টি লোকমুখে জানাজানি হলে সমাজিকতার তোপে পড়ে সে সাহেদাকে বিয়ে করতে রাজি হয়। কিন্তু আহাম্মদের পরিবার ওই বিয়ে মেনে নেয়নি। অনেকদিন তারা বাড়ির বাহিরে থাকে। গত বছরের ২৫ জুন সাহেদা একই গ্রামের লিল বানু, নুর জাহান ও মনোয়ারার সাথে খান্দুরা দরবার শরীফের ওরসে যায়। রাত প্রায় ২টার দিকে আহাম্মদের বন্ধু ওই গ্রামের আহাদ আলীর পুত্র হারুন মিয়া ও সুন্দর আলীর পুত্র সায়েদ মিয়া (৪০) গং সাহেদাকে ফোন করে মহিলা কাফেলা থেকে বাহিরে আসতে বলে। পরে তারা সাহেদাকে ওই স্থান থেকে তুলে নিয়ে ছাতিয়াইন এলাকার বগা নদীর পাড়ে নিয়ে গলায় শাড়ি পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। পর দিন স্থানীয় লোকজন নদীতে লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মন্নান মিয়া বাদী হয়ে ২৭ জানুয়ারি চুনারুঘাট থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত হারুন মিয়া নামে একজনকে আটক করে। পরদিন হারুন মিয়া ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দী দেয়।
ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন (সিআইডি) ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সিলেট শাহজালাল মাজারের ১নং গেইটে অবস্থান করে ঘাতক আহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ পর্যন্ত ঘাতক আহাম্মদসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও ২ জনকে আটক করার চেষ্টা চলছে।
নিহত সাহেদার বড় ভাই মামলার বাদী আব্দুল মন্নান বলেন, আমার বোনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।