নকশা আপডেট ও ডিপিপি খসড়া চূড়ান্ত ॥ অনুমোদনের জন্য শিগগিরই উঠছে একনেকে
হবিগঞ্জের মুখ রিপোর্ট ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা নিয়ে বিদ্যমান জটিলতার অবসান হয়েছে। প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অনিশ্চয়তাও কেটে গেছে। এখন এই প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পের খসড়া ডিপিপিও চূড়ান্ত করা হয়েছে। ডিপিপি ও নকশা নিয়ে এডিবির সবুজ সংকেত পেলে অনুমোদনের জন্য শিগগিরই ওঠানো হবে একনেকে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা চলছিল। সেই সংকট কাটিয়ে এখন এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইতিমধ্যে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য ৭টি জোনের মধ্যে ৫টির প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি ৭টি জেলার ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হবে। এ কারণে প্রতিটি জেলাকে একটি জোন ধরে ৭টি প্রস্তাবনা তৈরি করা হচ্ছে। তৈরি হওয়া পাঁচটি প্রস্তাব একনেকের অনুমোদনের জন্য শিগগিরই পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে দ্রুত জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করবে সড়ক বিভাগ। জমি অধিগ্রহণের পুরোটাই সরকার অর্থায়ন করবে।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়- ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল জানুয়ারি মাসে। সে লক্ষ্যে বছরের শুরুতে এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট চার লেন নির্মাণ প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চন্দন কুমার দে জানান- নকশা আপডেট হচ্ছে। একই সঙ্গে এই প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির কাজও চলছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর ডিপিপি তৈরির কাজ করছে। আশা করছি শিগগিরই ডিপিপি তৈরি হয়ে যাবে। তারপর সেটি অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাব্বির হাসান জানান- ইতিমধ্যে প্রকল্পের ডিপিপি ও নকশা আপডেটের কাজ শেষ করে এডিবির কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা খসড়া ডিপিপি দেখছে। তাদের চূড়ান্ত মতামত পাওয়ার পরই ডিপিপি অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হবে। আশা করা হচ্ছে ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই এই ডিপিপি একনেকে উত্থাপন করা হবে। তিনি আরও জানান- আশা করা হচ্ছে আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে সরকার ও এডিবির মধ্যে এই প্রকল্পের ঋণ চুক্তি সম্পন্ন হবে।
সওজ সূত্রে জানা যায়- ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ২১০ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করা হবে। থাকবে মহাসড়কের দুই পাশে ২টি সার্ভিস লেন। নির্মাণ হবে ৬টি রেল ওভারপাস। এ ছাড়া বেশ কিছু আন্ডারপাস থাকবে। মহাসড়কের দুই পাশে দেওয়া হবে ব্যারিয়ার, যাতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে গবাদিপশু সড়কে উঠতে না পারে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া সার্ভিস লেনের কোনো যানবাহন যেন মূল সড়কে উঠতে না পারে। ইউটার্ন থাকবে নির্দিষ্ট দূরত্বে। বিশেষ করে বাজার এবং আরবান বা রুরাল এলাকায় যেখানে জনবসতি আছে সেসব স্থান চিহ্নিত করে নির্মাণ করা হবে ইউটার্ন। সওজ সূত্রে আরও জানা যায়- এই প্রথমবারের মতো দেশের কোনো মহাসড়ক নির্মাণে ব্যবহার করা হবে পলিমার মোটিফাইড বিটুমিন। ফলে সড়ক হবে টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী। দুই মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হবে। মোট ১৩টি প্যাকেজে সম্পন্ন করা হবে প্রকল্পের পূর্তকাজ। আগামী বছরই এ প্রকল্পের মূল কাজ দৃশ্যমান হবে। ২০১৩-১৪ সালের দিকে এডিবি প্রথম সমীক্ষা করে। এরপর এ মহাসড়কের কাজ কারা করবে এ নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হলে এডিবি আর বেশি দূর এগোতে পারেনি।