মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যখন গোটা বিশ্ব স্তব্ধ তখন নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামে চলছিল বিয়ের জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন। বিয়ে বাড়িতে উৎসবের অংশ হিসেবে পুরোদমে চলছিল গান-বাজনা। আর ঠিক সেই মুহূর্তে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতার অংশ হিসেবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভন্ডুল হয়ে গেছে বিয়ের আয়োজন। সেই সাথে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিয়ের কোনো ধরণের আয়োজন না করার শর্তে মুচলেকা দিয়ে তবেই রক্ষা পায় কনেপক্ষ। বুধবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামে নেকরাজ মিয়ার বাড়িয়ে গিয়ে বিয়ের আয়োজন ভেঙে দেয় পুলিশ।
সূত্র জানায়, এনাতাবাদ গ্রামের নেকরাজ মিয়ার মেয়ের সাথে একই উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের রোকনপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার পুত্রের বিয়ে ৩০ মার্চ সোমবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের আয়োজন হিসেবে কনের বাড়ি কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামে চলছিল বিয়ের উৎসব। বিয়ের আয়োজন হিসেবে মাইক-স্পীকার দিয়ে উচ্চ সাউন্ডে গান-বাজনা চলছিল পুরোদমে। করোনা ভাইরাসে সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে মধ্যে এমন গণসমাবেশ আয়োজনের খবর পায় প্রশাসন। বুধবার রাত ১১টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল ও নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমানের নির্দেশে এসআই সমীরণ চন্দ্র দাশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিয়ে বাড়িতে পৌঁছে মাইক-স্পীকারের গান-বাজনা বন্ধ করেন এবং করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিয়ের গায়ে-হলুদ কিংবা কোনো আয়োজন করা হবে না মর্মে মুচলেকা দেন কনের বাবা নেকরাজ মিয়া। অতঃপর রক্ষা পায় কনেপক্ষ।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার এসআই সমীরণ চন্দ্র দাশ বলেন, করোনা ভাইরাসের করণে সব ধরণের সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত ও গণসমাবেশ করতে নিষেধ করা হলেও এনাতাবাদ গ্রামে বিয়ের উৎসবের অংশ হিসেবে উচ্চ সাউন্ডে গান-বাজনা চলছিল। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে গান-বাজনা বন্ধ করি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এতো মাইকিং এতো সচেতনতা মূলক প্রচার প্রচারণা এবং নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও এনাতাবাদ গ্রামে বিয়ের আয়োজনের অংশ হিসেবে মাইক-স্পীকার দিয়ে উচ্চ সাউন্ডে গান-বাজনার আয়োজন করা হয়। পরে আমরা খবর পেয়ে সেখানে একদল পুলিশ পাঠাই। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গান-বাজনা বন্ধ করে দেয়। এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কোনো ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করবেনা মর্মে কনের পিতা মুচলেকা দিয়েছেন। সকলের সচেতনতার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব তাই আসুন সকলে সচেতন হই। এবং নিজগৃহে অবস্থান করি।