স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথমবারের মত মোবাইল অ্যাপস এ কৃষকদেরকে ধান সরবরাহের সুযোগ করে দেয়ায় হবিগঞ্জের কৃষকরা আনন্দিত। কোন ধরনের হয়রানী ছাড়াই তারা ধান সরবরাহ করতে পারছেন। আবার অফিসেও নেই কোন তদবির বা চাপ। তারপরও হবিগঞ্জে নির্ধারিত সময়ে আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। তীব্র শীত এবং রোদ্রের অভাবে ধানের নির্ধারিত আদ্রতা নিশ্চিত করতে না পারায় এই আশংকা দেখা দিয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর দেশের নির্দিষ্ট কিছু উপজেলায় মোবাইল অ্যাপস এর মাধ্যমে কৃষক বাছাই করা হয়। এর মাঝে ছিল হবিগঞ্জ সদর উপজেলা। হবিগঞ্জে তালিকাভুক্ত কৃষক হলো ৩ হাজার ৯৬৫জন। ২০ ডিসেম্বর নির্ধারিত তারিখে ধান সরবরাহের সুযোগ পাওয়ার জন্য আবেদন করেন ১ হাজার ৪৯৬জন কৃষক। ২৪ ডিসেম্বর অনলাইনে লটারীর মাধ্যমে সুযোগ পান ৮০৪জন কৃষক। এর মাঝে বড় কৃষক হিসাবে ৮৮জন পান ২টন ৪শ কেজি, মাঝারী ২৮৮ জন ১ হাজার ৬শ কেজি এবং ৪৮৮ জন কৃষক পান ১টন করে।
হবিগঞ্জ খাদ্য গুদামে ১ হাজার ৬৪ টন ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন হয় মঙ্গলবার দুপুরে। কিন্তু শীতের কারণে মাত্র তিনজন কৃষক আসেন ধান সরবরাহ করার জন্য। ফলে ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ে এই ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের কৃষক কুদ্দুছ আলী আসেন ধান সরবরাহ করার জন্য। তিনি বলেন মোবাইলে ম্যাসেজ পেয়ে তিনি এখানে ধান দিতে এসেছেন। এবার কোন মধ্যস্বত্বভোগী আসেনি তার কাছে। কোন ধরনের হয়রানীও ছিল না বলে জানান তিনি।
উমেদনগর গ্রামের জহুর আলী বলেন, সব সময় যদি মোবাইল অ্যাপস এ ধান সংগ্রহ করা হয় তাহলে হয়রানী থেকে বাঁচবে কৃষক। এই পদ্ধতিতে ধান দিতে পেরে সবাই খুশি।
হবিগঞ্জের বিশিষ্ট ধান চাউল ব্যবসায়ী হাবিব খান জানান, ধান সরবরাহের জন্য আদ্রতা রাখতে হয় ১৪। কিন্তু রোদ্রের অভাবে ধান শুকাতে পারছে না কৃষকরা। তিনি ধান সরবরাহের জন্য সময় বৃদ্ধির দাবি জানান।
হবিগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল আমিনুল ইসলাম ভূইয়া জানান, অ্যাপস এর মাধ্যমে ধান সংগ্রহের ফলে কোন ধরনের তদবির বা চাপ নেই এখানে। তবে রোদ্রের অভাবে কৃষকদের অসুবিধা হচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেলে এই সমস্যা কমে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জ খাদ্য গুদামে প্রধান অতিথি হিসাবে ধান ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন রুবেল। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা আব্দুস সালাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, পৌর কাউন্সিলার জাহির উদ্দিন, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল আমিনুল ইসলাম ভূইয়া, ধান চাউল ব্যবসায়ী হাবিব খান, উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মাহবুবুল হক, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান, ইব্রাহিম হোসেন, সুমন ঘোষ ও মনসুর আলী।
মোবাইল অ্যাপস-এ ধান দিতে পেরে কৃষকরা খুশি হলেও ধান সরবরাহের সময় বৃদ্ধির দাবি তাদের
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com