
স্টাফ রিপোর্টার || হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর। পূজাকে ঘিরে হবিগঞ্জের বিপনী বিতানসহ বিভিন্ন মার্কেট ও বাজারে কেনাকাটা বেশ জমে উঠেছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ক্রেতাদের মধ্যে তরুণ-তরুণীর সংখ্যাই বেশি। তারা জানান, পূজার এখনও অনেক দিন বাকি। কিন্তু ভিড় এড়াতে আগেভাগেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন তারা। শহরের বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে দেখা যায়, নরমাল জিন্স প্যান্ট ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, ড্রপ সোল্ডার টি-শার্ট ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শার্ট ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং সাধারণ টি-শার্ট ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্যান্ডের পণ্যের ক্ষেত্রে মূল্য অনেক বেশি। যদিও শহরের প্রায় প্রতিটি ব্যান্ডের কাপড় ও জুতার দোকানে মূল্য ছাড়ের ছড়াছড়ি লক্ষ করা গেছে।
কেনাকাটা করতে আসা সুভাষ নামের এক ক্রেতা বলেন, পূজায় বাড়ি যাবো। কয়েকদিন আগেই যাবো। তাই আগেভাগে কেনাকাটা করে নিচ্ছি। এখন ভিড়ও কম, কেনাকাটা করতেও সুবিধা হচ্ছে।
নিপু বিশ্বাস নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, দুর্গাপূজা আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছরই পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কিনি। এবারও তাই মার্কেটে এসেছি।
সুস্মিতা নামের বিশ্ববিদ্যালয় এক ছাত্রী বলেন, পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পূজার আগে বাড়ি যাচ্ছি, তাই এবার কেনাকাটা আগেই সেরে ফেলছি।
দোকানে বেচা-কেনা বেশি হলে ব্যবসায়ীরাও খুশি থাকেন। নিউ মার্কেটের দোকানি আদনান বলেন, আজ থেকেই ক্রেতার ভিড় বেড়েছে। বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে। আশা করছি পূজার আগে আরও জমজমাট কেনাবেচা হবে।
পোশাকের পাশাপাশি সাজসজ্জার দোকানেও ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রসাধনী, ফুল, গয়না, উপহার সামগ্রী ও পূজার বিশেষ অলঙ্কার সামগ্রী কিনতে নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রসাধনী ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া জানান, প্রতিদিনই সাজসজ্জার সামগ্রীর বিক্রি বাড়ছে। বিশেষ করে কৃত্রিম গয়না ও চুলের সাজসজ্জার আইটেম বেশি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্র জানায়, পূজার আগে ও পূজা চলাকালীন সময়ে মার্কেট ও পূজামণ্ডপ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে বাজার ও মণ্ডপ এলাকাগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হবে।
এদিকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রস্তুতিও প্রায় শেষ পর্যায়ে। মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা নির্মাণ, আলোকসজ্জা ও সাজসজ্জার কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ বছর পূজা মণ্ডপগুলোর নকশায় আনা হয়েছে নতুনত্ব। আধুনিক লাইটিং, বাঁশ ও কাপড়ের কারুকাজ দিয়ে তৈরি হচ্ছে আকর্ষণীয় প্যান্ডেল, যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে। ব্যবসায়ী ও আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন, পোশাক-সাজসজ্জা এবং পূজামণ্ডপের রঙিন আয়োজন এবারের দুর্গাপূজায় দেবে ভিন্ন মাত্রা।