জুমার খুৎবায় মাওলানা তাহের উদ্দিন সিদ্দিকী
এম এ মজিদ ॥ হবিগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া আল হুসাইন জামে মসজিদে (১৮ এপ্রিল) জুমার খুৎবায় মাওলানা তাহের উদ্দিন সিদ্দিকী বলেছেন- সন্তানদের পিছনে ব্যয় করতে হবে। সন্তানদের পিছনে ব্যয় করা দান সাদকার মতোই সওয়াব। তবে সন্তানদের পিছনে ব্যয় করতে হবে হালালভাবে উপার্জিত টাকা থেকে। ঘুষ খেয়ে, সুদ খেয়ে অন্যায়ভাবে টাকা আয় করে সন্তানদের পিছনে খরচ করলে তাতে তো সওয়াব হবেই না উপরুন্ত পাপের বোঝা আপনাকেই বহন করতে হবে। আবার সন্তানদের পিছনে এতো বেশি খরচ করা যাবে না যাতে করে তারা বিপথগামী হয়ে যায়। একটি ব্যালেন্স রাখতে হবে। সন্তান নামাজ পড়ছে কি না, ইসলামের বিধি বিধান মোতাবেক চলছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন- বেশি বেশি কবরের কথা স্মরণ করতে হবে। বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী হযরত ওসমান রাঃ কবরের পাশ দিয়ে গেলে ডুকরে ডুকরে কাঁদতেন। ওনাকে জিজ্ঞাসা করা হতো কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আপনি এতো কাঁদেন কেন, জবাবে ওসমান রাঃ বলতেন- কবর হচ্ছে আল্লাহর কাছে যাওয়ার প্রথম ঘাট, প্রথম পরীক্ষা। যে ব্যক্তি কবরের প্রথম পরীক্ষায় পাশ করবে তার জন্য অন্যান্য বিষয়গুলো সহজ হবে। হাশরের ময়দান কোনো কোনো বান্দার জন্য এতো দীর্ঘ হবে যে, একটি দিন দুনিয়ার ৫০ হাজার বছরের চেয়ে বেশি লম্বা হবে। দুনিয়ার ছেলে মেয়ে স্ত্রী মা বাবা কারো কথা কারো স্মরণ থাকবে না। সবাই নিজের জন্য পেরেশান হয়ে যাবে। দোযখের পেটের উপর দিয়ে ফুলসিরাতের পুল পার হতে হবে। আমলনামা ডান হাতে না দিয়ে বাম হতে দিলেই দোযখের ভয়াবহ যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে নামাজ কায়েম করতে হবে। যাকে যখনই কবরে দাফন করা হবে মৃত ব্যক্তিকে সূর্য ডুবুডুবু অবস্থায় কবর থেকে জীবিত করা হবে। মৃত ব্যক্তি দুনিয়াতে নামাজী হলে কবরে জীবিত করার সাথে সাথে বলতে থাকবে সুর্য ডুবে যাচ্ছে, সূর্য ডুবে যাচ্ছে, এখনই আমাকে নামাজ পড়তে হবে। ফেরেশতাদেরকে বলতে থাকবে এখন আমার নামাজের সময় আমাকে নামাজ পড়তে দেন। ফেরেশতারা বলতে থাকবে, আপনি সফল, আপনি সফল। আর যদি মৃত ব্যক্তি দুনিয়ায় নামাজী না হয় তাহলে ফেরেশতাদের প্রশ্নবানে মুছড়ে যাবে, তাকে শাস্তি দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, জুমার নামাজের পরে মসজিদ প্রাঙ্গণে তেঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মঈনুল হক তোফায়েলের নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগী মেয়র আলহাজ¦ জি কে গউছসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তেঘরিয়া আল হুসাইন রঃ জামে মসজিদের কয়েকজন মুসল্লীর উদ্ভট আচরণ ছিল দৃষ্টিকটু। একজন মুসল্লী মুয়াজ্জিন সাহেবকে লক্ষ্য করে কর্কশ মেজাজে বলতে থাকেন পিছনে মুসল্লী দাঁড়িয়ে আছে ভেতরে জায়গা করে দেয়ার কথা বলেন না কেন? জুমার নামাজের সালাম ফেরানোর সাথে সাথে আরেক মুসল্লী ইমাম সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন- নামাজের পরে জানাজা হবে তা বার বার বলেন না কেন? ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের প্রতি এসব মুসল্লীদের সামন্যতম ভদ্রতা নম্রতা শ্রদ্ধা লক্ষ্য করা যায়নি। জুমার নামাজের খতিব মাওলানা তাহের উদ্দিন সিদ্দিকী রিচি দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট হিসাবে কর্মরত।