প্রতিবাদ করায় ঘুষি মেরে ফুফুশাশুড়ির নাক ফাটিয়ে দিয়েছে জামাতা ॥ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হামলাকারী রনিকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে

নুর উদ্দিন সুমন ॥ চুনারুঘাটে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় হাসপাতালে গিয়েও স্ত্রীকে দ্বিতীয় দফা মারপিট করেছে স্বামী। শুধু তাই নয়, স্বামীর নির্যাতনে আহত ভাইঝিকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়া ফুফুশাশুড়িকেও ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছে জামাতা। এ ঘটনায় ফুফু নুরবানুও আহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চুনারুঘাট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, সদর ইউনিয়নের মধ্যনরপতি গ্রামে যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে সকালে চুনারুঘাট হাসপাতালে ভর্তি হন একই গ্রামের রমিজ আলীর কন্যা পুতুল বেগম (২২)। বিষয়টি জানার পর আহত পুতুলকে দেখতে হাসপাতালে যান তার ফুফু নুর বানুসহ স্বজনরা। পুতুল হাসপাতালে ভর্তির খবর জানতে পেরে স্বামী পারভেজুর রহমান রনি হাসপাতালে যান। তখন পুতুলের স্বজনদের সাথে নির্যাতনের বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে রনি তার ফুফুশাশুড়ি নুর বানুকে কিল ঘুষি মারলে তার নাক থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এ ঘটনায় হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হামলাকারী যুবককে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানার এসআই সামিউল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হামলাকারী স্বামী পারভেজুর রহমান রনিকে (২৫) আটক করে থানায় নিয়ে যান। রনি সিলেটের ছাতক উপজেলার ছাদিকুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর থেকে রনি নরপতি গ্রামেই বসবাস করছে। এদিকে আহত নুর বানু (৫০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আহত নুরবানু সদর ইউনিয়নের মধ্য নরপতি গ্রামের মৃত আঃ ছত্তার মিয়ার স্ত্রী। নুর বানু জানান, রনি তার ভাইজি পুতুলকে বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য মানসিক শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে স্বামী। নির্যাতনের শিকার পুতুলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখবর শুনে তিনি তাকে হাসপাতালে দেখতে যান, পুতুল কেন হাসপাতালে ভর্তি হল এনিয়ে পুতুলকে চড়থাপ্পর মারে স্বামী রনি। তখন ফুফু বাধা দিলে রনি তাকেও হামলা করে। হাসপাতালে আসা রোগীরা জানান চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতালেও যদি হামলা হয় তাহলে আমরা কেউ নিরাপদ নই। এ হামলার সঠিক বিচার চান রোগীরা। আটক রনির স্ত্রী জানান, তার স্বামী টাকার জন্য প্রায়ই তাকে নির্যাতন করে।
হাসপাতালের আরএমও মোমিন উদ্দিন চৌধুরী জানান, হাসপাতালে হামলার খবর শুনে সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ জানায় তাদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।