মেয়ের বিয়েতে টাকাটা খুবই কাজে দিবে বলে জানান অনুদান পাওয়া পরেশ চন্দ্র দাস
স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পী রানী দাস। লেখাপড়া শেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরী পান। এই চাকুরীর টাকায় দরিদ্র পিতা পরেশ চন্দ্র দাসের মুখে হাসি ফুটাতে চেষ্টার কমতি ছিলনা শিল্পীর। মেয়ের বিয়ে দেয়ার জন্য যখন পাত্র খুঁজছেন পরেশ চন্দ্র দাস তখনই জানতে পারেন তার মেয়ে লিভার সিরোসিস আক্রান্ত। অনেক চিকিৎসার পর শিল্পী রানী মারা যান। শোকে কাতর পরেশ চন্দ্র দাস যখন সবকিছু ভুলে ছোট মেয়েকে বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন টাকার অভাবে তা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে জানতে পারেন তার মেয়ে চাকুরীরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় প্রধানমন্ত্রী তাকে ৮ লাখ টাকা দিবেন। আশায় বুক বাঁধেন তিনি। রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে পরেশ চন্দ দাসের হাতে তুলে দেয়া হয় ৮ লাখ টাকার চেক। এই চেক পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেশ চন্দ্র দাস বলেন ‘এখন ছোট মেয়ের বিয়ের টাকার জন্য চিন্তা করতে হবে না।’
চুনারুঘাট উপজেলার বড়াইল গ্রামের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য যখন কিডনী রোগে মারা যান তখন তার ২ যমজ সন্তানের বয়স মাত্র ২ বছর। স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী ডলি রানী ভট্টাচার্য্য স্বামীকে হারিয়ে দুই সন্তানকে মানুষ করতে অমানুষিক পরিশ্রম শুরু করেন। তিনিও যখন ৮ লাখ টাকার চেক হাতে পান তখন ২ যমজ সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মাঝেও নতুন একটি আশা দেখতে পান।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফারুক ইসলাম যখন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তখন তিনি সদ্য বিবাহিত। কুড়িগ্রামের চিলমারীর মোর্শেদা হোসাইন কোন সন্তান জন্মদানের আগেই হয়ে যান বিধবা। রবিবার তিনি অনেক পথ পাড়ি দিয়ে এসে গ্রহণ করেন ৮ লাখ টাকার চেক।
শিল্পী রানী, বিষ্ণুপদ আর ফারুকুল ইসলামের মত হঠাৎ বিপদে পড়ে যাওয়া ২৪টি পরিবারের লোকজন রবিবার দুপুরে একত্র হয়েছিলেন জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে। কর্মকালীন সময়ে আকষ্মিক মৃত্যুতে তাদের পরিবারে নেমে আসা কষ্টের কথা তুলে ধরেন অনেকেই। এই কষ্টের মাঝে প্রধানমন্ত্রী দেয়া টাকা অনেক কাজে লাগবে বলেও প্রতিক্রিয়ায় জানান তারা। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান ২৪টি পরিবারের হাতে তুলে দেন ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকার চেক। একই সাথে এই অসহায় পরিবারের পাশে সবসময় জেলা প্রশাসন থাকবে বলে ঘোষণা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রফিকুল আলম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাতিল ইভান ও জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।