বিচার চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজমিরীগঞ্জে সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য আবেদপত্রে সুপারিশ আনতে গিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার হেনস্থার শিকার হয়েছেন এক শিক্ষিকা। শুধু তাই নয়, অসদাচরণের অভিযোগ এনে ওই শিক্ষকাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। গত ৬ এপ্রিল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন হেনস্থার শিকার শিক্ষিকা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে দেয়া অভিযোগপত্রে উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের কাটাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক স্বস্তি রানী দাস উল্লেখ করেন, গত ৬ এপ্রিল তিনি সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলনের আবেদনফর্মে সাক্ষর সংগ্রহ করতে প্রধান শিক্ষকের অনুমতিক্রমে মুভমেন্ট খাতায় সাক্ষর করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হকের সুপারিশ নিতে তার কার্যালয়ে যান। এসময় শিক্ষা কর্মকর্তা ঋণ উত্তোলনের আবেদনফর্মে সাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করে তার সাথে বাজে ব্যবহার করেন এবং তাকে অফিস থেকে বের করে দেন। সাক্ষর না পেয়ে তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে ফিরে আসেন। ১১ এপ্রিল তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ পান। ১৩ এপ্রিল তিনি নোটিশের জবাব দাখিল করেন। এদিকে নোটিশের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষিাকার পরিবারে তাকে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝেও ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে ভুল বুঝে তার উপর মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে। তাছাড়া ৬ এপ্রিল তার সাথে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কথোপকথন শিক্ষা অফিসে উপস্থিত কে বা কারা রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বর্তমানে বিষয়টি তার পরিবারের জন্য চরম মানহানিকর ও হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। তিনি দাবি করেন, যুক্তি সঙ্গত সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে তিনি গালাগাল ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা অভিযোগে কৈফিয়ত তলব করা হয়। যা ক্ষমতার অপব্যবহার। এমতাবস্থায় বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পাশাপাশি হারানো সম্মান ও পারিবারিক অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বিচার প্রার্থনা করেন।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য আবেদপত্রে সুপারিশ আনতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন সহকারি শিক্ষক স্বস্তি রানী দাস। পরদিন সহকারী শিক্ষিকাকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন শিক্ষা কর্মকর্তা। এতে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও টেবিলে থাপ্পর দেওয়ার অভিযোগ এনে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থার জন্য সুপারিশ করা হবে না, তা জানিয়ে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এছাড়া অসদাচরণের সময় আরও কয়েকজন শিক্ষক সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং ওই শিক্ষিকা ছুটি না নিয়েই পাঠদানে বিঘœ ঘটিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হক বলেন, ‘শিক্ষকের ব্যক্তিগত ঋণের আবেদনপত্রে সাক্ষর করা আমার দাপ্তরিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। সাক্ষর না দেওয়ায় ওই শিক্ষিকা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ব্যক্তিত্ব রক্ষায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি।