স্টাফ রিপোর্টার ॥ মোটা অংকের টাকা না দেয়ায় ওয়াহিদ মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে মাদক মামলার চার্জশীটে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে মাধবপুর উপজেলার কাশিমনগর ফাঁড়ির এসআই ফজলুল হকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তিনি ওয়াহিদ মিয়ার ভাগিনাকেও অন্য একটি মামলার আসামি করেছেন। এমন অভিযোগ এনে গতকাল হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন ওয়াহিদ মিয়া।
লিখিত বক্তব্যে ওয়াহিদ মিয়া অভিযোগ করেন, উপজেলার ২৫ বিজিবি সরাইল ব্যাটালিয়ন হরষপুর সীমান্ত ফাঁড়ির হাবিলদার সবুর মিয়াসহ একদল সিপাহী গত বছরের ২০ জুলাই শিয়ালউড়ি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে চৌমুহনী ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল মোতালেবের পুত্র মোঃ আতিক মিয়াকে ২ বোতল বিদেশী মদ, মোটরসাইকেল ও কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশসহ আটক করে। বিজিবির হাতে আটক হওয়ার আরও আগে পূর্ব পরিচিত আতিক মিয়া তাদের বাড়িতে এসে মোটর সাইকেলটি ব্যবহারের জন্য নিয়ে যায়। পরে সে মাদক ও কম্পিউটারের যন্ত্রাংশসহ বিজিবির হাতে আটক হয়। বিজিবি আতিকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। পরে তিনি তার মোটর সাইকেল ছাড়িয়ে আনতে বিজিবির সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ওয়াহিদ মিয়া আদালত থেকে মোটর সাইকেলটি ছাড়িয়ে নেন। কিন্তু কাগজপত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রয়োজন হওয়ায় তিনি কাশিমনগর ফাঁড়ির এসআই ফজলুল হকের কাছে যান। এ সময় এসআই ফজলুল হক তার কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। এক পর্যায়ে নিরূপায় হয়ে ওয়াহিদ মিয়া তার ভাগিনা সালামকে নিয়ে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা প্রদান করেন। পরে এসআই ফজলুল হক স্বাক্ষর করলে মোটর সাইকেলটি ছাড়িয়ে নিয়ে যান তিনি। পরবর্তীতে এসআই ফজলুল হক ওয়াহিদ মিয়ার কাছে আরও টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিনি টাকা না দেয়ায় তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন ওই এসআই।
লিখিত বক্তব্যে ওয়াহিদ মিয়া আরো বলেন, লোকমারফত কিছুদিন পর জানতে পারেন পুলিশ তাকে খোঁজছে। পরে খবর নিয়ে দেখেন তাকে ওই মামলায় আসামি করে আদালতে চার্জশীট দিয়েছেন এসআই ফজলুল হক। ফলে আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। কথামতো টাকা দেয়ার পরও ওয়াহিদ মিয়াকে আসামি করার বিষয়ে তার ভাগিনা জানতে চাইলে এসআই ফজলুল হক তার প্রতিও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং তাকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। গত ২০ মার্চ রাতে আলীনগর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি বস্তা উদ্ধার করেন এসআই ফজলুল হক। ওই বস্তায় মাদক পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি সালামকে পলাতক আসামি দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার সময় সালাম তার বাড়িতে ছিলো বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত অভিযোগে। এসআই ফজলুল হকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান ওয়াহিদ মিয়া ও তার পরিবার।