মাদকসেবী ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভয়ারণ্যে পরিণত
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ জেলা সদরের সর্ববৃহৎ অত্যাধুনিক কিবরিয়া মিলনায়তনটি এক যুগেরও অধিক সময় ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। শাহ এ এম এস কিবরিয়া অর্থমন্ত্রী থাকাকালে প্রায় ২৫ বছর পূর্বে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক কিবরিয়া মিলনায়তনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়েছে। মিলনায়তন ক্যাম্পাসের চারপাশ আগাছা এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক গাছে সৃষ্ট ঝোপঝাড় সাপ আর হিং¯্র প্রাণী এবং মাদকসেবী ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
গ্রেনেড হামলায় নিহত শাহ এ এম এস কিবরিয়া অর্থমন্ত্রী থাকাকালে আনসার অফিসের পাশে অত্যাধুনিক একটি মিলনায়তন নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে হবিগঞ্জ পৌরসভা মিলনায়তনটির নামকরণ করে কিবরিয়া পৌর মিলনায়তন। প্রথম দিকে হবিগঞ্জের প্রায় সকল অনুষ্ঠান কিবরিয়া পৌর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু অধিক ভাড়ার কারণে অনেকেই ওই মিলনায়তনে অনুষ্ঠান করতে আগ্রহ দেখাননি। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার কারণে মিলনায়তনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মিলনায়তনের পাঠাতন, সিলিং খসে পড়তে থাকে। এসিওসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদীসহ একাধিকবার বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এক পর্যায়ে কিবরিয়া মিলনায়তনটি মাদকসেবী ও অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িতদের আখড়ায় পরিণত হয়। এদিকে বছরের পর বছর অগাছা আর পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছে ভবনের চারপাশ ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এ সব ঝোপঝাড়ে বিষধর সাপ সহ হিং¯্র প্রাণীর অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এতে দিনের বেলাও কিবরিয়া মিলনায়তনের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে অনেকে সাহস করেন না।
পৌর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, মিলনায়তনের চারপাশের অপ্রয়োজনীয় ও পরিবেশের অনুপযোগী গাছ ও ঝোপঝাড় পরিস্কার এবং মিলনায়তনটি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করতে বর্তমান পৌর পরিষদ উদ্যোগ নিয়েছে। সে অনুযায়ী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনুমতি এবং বনবিভাগের নির্ধারণ মূল্য অনুযায়ী অপ্রয়োজনীয় ও পরিবেশের অনুপযোগী গাছ নিলামে বিক্রির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়। সূত্রমতে বনবিভাগ গাছের মূল্য প্রায় ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকার নির্ধারণ করে দিলেও সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকা মূল্যে গাছগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কিবরিয়া পৌর মিলনায়তনটি চোর, মাদকসেবী ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িতদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ একাধিকবার পরিদর্শন করে মিলনায়তন সংস্কারে উদ্যোগ নিতে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সে অনুযায়ী মিলনায়তনটিকে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও বন বিভাগের চিহ্নিত করা অপ্রয়োজনীয় নস্ট গাছগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাইপাস সড়কের দিকে আরো দুটি গেইট নির্মাণ করা হবে। অচিরেই কিবরিয়া পৌর মিলনায়তনকে সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। আবারো এ মিলনায়তনে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।