আক্তার হোসেন আলহাদী ॥ বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে গেলো ৪ বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর আবারও শুরু হয়েছে শত বছর ধরে চলে আসা গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা (বান্নি)। বাংলা সনের পৌষ মাসের শেষ ৩ দিন প্রতি বছর পালিত হয়ে থাকে এ মেলা। মেলাকে ঘিরে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর মেতে উঠেন আনন্দ উল্লাসে। মেলায় দল বেঁধে যার যার মতো করে নানান জিনিস ক্রয় করেন আগত দর্শনার্থীরা।
শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা (বান্নি) বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১ নাম্বার ও ২ নাম্বার ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে হওয়ায় সহজেই সব শ্রেণি পেশার মানুষ এতে অংশ নিতে পারেন। এ মেলাকে ঘিরে পুরো বানিয়াচং উপজেলা জুড়েই চলে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন স্থান থেকে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর মেলায় আসেন। দিনব্যাপী মেলাতে সহ¯্রাধিক দোকানে পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। মেলায় শিশুদের খেলনা, মাটির তৈরি গরু, হাতি, ঘোড়া, উট, বক, পুতুল ইত্যাদি ছাড়াও গৃহস্থলি সামগ্রীর অনেক জিনিস ওঠে। মুখরোচক খাবার মন্ডা-মিঠাই সহ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মজাদার খাবারের পাশাপাশি আসবাবপত্র, মেয়েদের প্রসাধনী সামগ্রী ও চুড়ি-মালার স্টল বসে। এছাড়া মেলায় গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে।
তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া গ্রামীণ জনপদেও এসে পৌঁছেছে। এর পরও আবহমান গ্রাম বাংলার ঐহিত্য হচ্ছে পৌষ মেলা। এ পৌষ মেলা চলবে অনাদিকাল পর্যন্ত।
সৈদ্দারটুলা ছান্দবাসীর পক্ষে অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান বলেন, বানিয়াচংয়ের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা। প্রতি বছর পৌষ মাসের শেষ তারিখে মাতাপুর মাঠে শুরু হয়। যদিও কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দুয়েক বছর মেলা বন্ধ ছিলো।
সাংবাদিক শেখ জওহর হোসেন ফাহদী বলেন, বানিয়াচংয়ের ঐতিহাসিক পৌষ মেলা অনাদিকাল থেকে চলে আসছে। আমরা মনে করি আগামীতেও এটা থাকবে।
মাতাপুর মহল্লার সর্দার এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, এটা মাতাপুর মহল্লার মেলা। এটা এক ঐতিহ্যবাহী মেলা। আমরা সব সময় চাই যাতে এই মেলাটা সুশৃঙ্খলভাবে থাকে। যাতে কোনো অঘটন না ঘটে।
মেলায় আসা এক ব্যবসায়ী জানান, আল্লাহর রহমতে বেচাকেনা মোটামুটি ভালোই হচ্ছে। মেলাটা তিন বছর বন্ধ ছিলো। এতে আমাদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায়ীক ক্ষতি হয়েছে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা যেনো সুন্দর ভাবে কেনাকাটা সহ আনন্দ উৎযাপন করতে পারেন এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।