মেয়েটির শয়নকক্ষ থেকে এক যুবকের মানিব্যাগ মোবাইল ফোন ও আইডি কার্ড উদ্ধার করেছে বানিয়াচং থানা পুলিশ ॥ তিন বছর আগে মেয়েটির বড় বোন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচঙ্গ উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নের ইকরাম গ্রামে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে এক দুর্বৃত্ত। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে নিজ বাড়িতে একাকী থাকা অবস্থায় মেয়েটি আক্রমণের শিকার হয়েছে। তার উপর এই আক্রমণের ঘটনা নিয়ে নানামূখী কথা শোনা যাচ্ছে। পুলিশও নিশ্চিত করে কোন তথ্য দিতে পারছে না। বিষয়টি সম্পর্কে র‌্যাবও খোঁজ-খবর নিচ্ছে।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র জানায়, ইকরাম গ্রামের মৃত মোস্তফা মিয়ার কন্যা, দশম শ্রেণীর ছাত্রী মারজানা আক্তার (১৮) মঙ্গলবার রাতে ঘরে একা ঘুমিয়েছিল। মেয়েটির মা অন্য বাড়িতে থাকেন। ভাইও তার সাথে থাকে না। মেয়েটি যে ঘরে একা বাস করে সেখানের আশপাশে কোন বাড়িঘরও নেই। এ পরিস্থিতিতে মেয়েটির মা ও তাকে নিয়ে নানা রটনা রয়েছে এলাকায়। এরই মধ্যে গভীর রাতে মেয়েটি আক্রমণের শিকার হয়। গতকাল সকালে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তার মাথায় ব্যান্ডেজ করে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালে দেখা যায় তার মাথা কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। এ দৃশ্য দেখলে যে কেউ শিহরিয়ে উঠবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান, মেয়েটির মা অন্যের বাড়িতে থাকেন। ঘরে সে একা ঘুমিয়েছিল। তিনি বলেন- আমি নিজে উপস্থিত থেকে তাকে এম্বুলেন্সে সিলেট পাঠিয়েছি। সিলেট পাঠানোর আগে তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম তাকে কেন কুপিয়েছে, মেয়েটি আমার কাছে বলতে রাজি হয়নি, তার মায়ের কাছে বলবে বলে জানিয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম আরো জানান, এলাকার লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, আক্রমণকারী যুবকের সাথে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের সুবাদে ওই যুবক মেয়েটির সাথে দেখা করতে রাতে তার ঘরে যায়। সেখানে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে ওই যুবক মেয়েটিকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তবে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, মেয়েটির শয়ন কক্ষ থেকে পাশ্ববর্তী গ্রামের এক যুবকের মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন ও আইডি কার্ড উদ্ধার করেছে বানিয়াচং থানা পুলিশ। সন্দেহজনক ওই যুবককে খুঁজছে পুলিশ। সূত্র জানায়, প্রায় তিন বছর আগে মেয়েটির বড় বোন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্র্জ মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, আহত ছাত্রীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ অতিশীঘ্রই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারবে বলে আশা করছি।