স্টাফ রিপোর্টার \ হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আলোনিয়া গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান মোঃ মোশাহীদ মিয়া (২৬)। তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা হচ্ছে। এ কারণে কৃষক পরিবারটি অস্বস্তির মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে। তারা কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। অবশেষে এসব মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে মোঃ মোশাহীদ মিয়া ৪ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। এর অনুলিপি দিয়েছেন চুনারুঘাট থানা, ডিজিএফআই হবিগঞ্জ, এনএসআই হবিগঞ্জকে।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আমি একজন শ্রমজীবী। জীবিকার তাগিদে সৎ পথে বাঁচার জন্য কাঠের ব্যবসা শুরু করি। বিভিন্ন গ্রাম থেকে দেশীয় গাছ সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে লভ্যাংশ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। এরই মধ্যে ব্যবসায় সফলতা পাই। কিন্তু ব্যবসায় সফলতা দেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে।
অবশেষে ২০১০ সালে জায়গা জমি বিক্রি করে দুবাই চলে যাই। বিদেশে ৩ বছর রোজগার করে দেশে চলে আসি। বিদেশ থাকা অবস্থায় ষড়যন্ত্রকারীরা প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করায়। পরে আমি দেশে এসে হাজিরা দিয়ে প্রবাসের সকল তথ্য দেখালে কোর্ট এ মামলাটি খারিজ করে দেন। দেশে ফিরে আবার পুনরায় কাঠের ব্যবসা শুরু করি। এতেই ষড়যন্ত্রকারীরা আবার আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগে যায়। একে একে তারা আমার বিরুদ্ধে ২টি মিথ্যা মামলা করায়। এমনকি বিদেশ যাওয়ার পুর্বে ষড়যন্ত্রকারীরা আমার বিরুদ্ধে আরো দুইটি মামলা করিয়েছিল। এনিয়ে আমার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা হয়। এর মধ্যে বিদেশ থাকা অবস্থায় দায়েরকৃত মামলাটি আদালত খারিজ করে দেন। সম্প্রতি মিথ্যা মামলায় কয়েক মাস কারাভোগে ছিলাম।
একের পর এক মিথ্যা মামলায় আমার জীবন বিষন্ন করে তুলেছে। পরিবারে আমার দুই কন্যা সন্তান, স্ত্রী, মা, বাবা, ভাইবোনসহ ১৪ জন সদস্য রয়েছে। মূলত আমার রোজগারের উপর পরিবারের সিংহভাগ ভরণপোষণ হচ্ছে। এখানে মিথ্যা মামলা দায়ের হওয়ায় আমার আয় রোজগার কমে গেছে। আর যা রোজগার করছি মামলা পরিচালনায় ব্যয় করতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমি পথে বসার উপক্রম হচ্ছে। বিষদভাবে তদন্ত করে আমাকে এসব মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে সুন্দর জীবন উপহার দেয়ার জন্য দাবি জানাই। মোশাহীদ জানায়, সে কাঠ ব্যবসা ছেড়ে এখন পরিবারের সদস্যদের সাথে কৃষি কাজে মনযোগী হয়েছে।
মোশাহীদের পিতা ছাবু মিয়া বলেন, বহু কষ্ট করে জমিজমা ক্রয় করেছেন। এসব জমিতে ফসল চাষ করছেন। সুন্দরভাবে তাদের পরিবার চলছিল। কিন্তু তার সন্তান মোশাহীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা হওয়ায় বৃদ্ধ বয়সে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। রাতে ঘুম আসে না। সেই সাথে পুরো পরিবার অস্বস্তি নিয়ে বসবাস করছে। মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে ছেলের ব্যাপারে সঠিক তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য তিনি দাবি করেছেন। এতে তার সন্তান সুন্দর জীবন ফিরে পাবে।