৬৬ জন ঠিকাদার দরপত্র ক্রয় করেন অথচ দাখিল করেন মাত্র ৪ জন ॥ নিকোসিয়েশন মানি সাড়ে ৪ লাখ টাকা ঠিকাদারদের মধ্যে ভাগাভাগি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে খাদ্য ও পথ্য সরবরাহ এবং মনোহারী দ্রব্যাদি সরবরাহের টেন্ডারে ঠিকাদাররা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাধবপুর সড়ক ও জনপথ বাংলোতে বসে দরপত্র ক্রয়কারী ঠিকাদাররা সিন্ডিকেট করে ৪ জন ঠিকাদারের নামে দরপত্র দাখিল করেছেন। বাকী ৬২ জন ঠিকাদারদের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ভাগ ভাটোয়ারা করে দেওয়ায় তারা দরপত্র দাখিল করেননি। এ নিয়ে মাধবপুরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মাধবপুর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দরপত্র গ্রহণের শেষ তারিখ ছিল ৭ জানুয়ারি। ৬৬ জন ঠিকাদার রোগীদের মধ্যে খাদ্য ও পথ্য সরবরাহ এবং মনোহারী দ্রব্যাদি সরবরাহের লক্ষ্যে মাধবপুর হাসপাতাল থেকে দরপত্র ক্রয় করেন। দরপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ছিল ৭ জানুয়ারি। কিন্তু ঠিকাদারগণ সরাসরি দরপত্র দাখিল না করে মাধবপুর সড়ক ও জনপথ বাংলোতে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ইসলাম ট্রেডার্স, রনি ট্রেডার্স, জিসু এন্টারপ্রাইজ ও রায় এন্টারপ্রাইজ নামে ৪টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে দরপত্র দাখিল করবেন। বাকী ৬২ জন ঠিকাদারকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ‘নিকোসিয়েশন মানি’ প্রদান করে সমঝোতাকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর ফলে খুব সহজেই কোন ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়া ইসলাম ও রনি এন্টারপ্রাইজ হাসপাতালের টেন্ডারের কাজ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন।
মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইশতিয়াক আল মামুন বলেন, ৬৬ জন ঠিকাদার দরপত্র ক্রয় করেছেন কিন্তু জমা করেছেন মাত্র ৪ জন। কি কারণে বাকী ঠিকাদাররা দরপত্র জমা করেননি তা আমার বোধগম্য নয়। তবে কারো বাঁধার মুখে বা চাপের কারণে কেউ দরপত্র জমা দিতে পারেননি এমন কোন লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা পুনরায় টেন্ডারের ব্যবস্থা করব। এছাড়া কোন সিন্ডিকেট হয়ে থাকলে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব।
মাধবপুর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সেক্রেটারী ডাঃ জীবন কৃষ্ণ বণিক ও সদস্য কাওছার আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। হাসপাতালের রোগীদের খাবার সরবরাহের টেন্ডারে ঠিকাদারদের সিন্ডিকেটের বিষয়টি আমরা জেলা দুর্নীতি দমন সমন্বিত কার্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করব। যাতে তারা তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।