হবিগঞ্জে বিভিন্ন সড়ক থেকে ৫শ’ অবৈধ যানবাহন আটক করেছে পুলিশ
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ আজ রবিবার সকল বাস কোচ থাকবে ডিসি অফিস ও জেলার সকল ইউএনও’র অফিসের সামনে। অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ না হলে সকল গাড়ি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপ ও বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সকল বাস ও কোচ জেলা প্রশাসক ও স্ব স্ব উপজেলার ইউএনও’র কাছে হস্তান্তর করা হবে। এদিকে, হবিগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক থেকে ৫শ’ অবৈধ যানবাহন আটক করেছে পুলিশ।
হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শঙ্খ শুভ্র রায় জানান- হবিগঞ্জ জেলার সকল সড়ক মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে গত ১৩ অক্টোবর আমরা হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন জানাই। মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে আমরা ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেই। কিন্তু জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমরা ২০ অক্টোবর বাস কোচ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করি। ওই দিনই বিকেল ৪টায় হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের আহবানে আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বৈঠকে বসি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় সামনে দুর্গাপূজা, তাই পূজার পর ১ নভেম্বর থেকে হবিগঞ্জ জেলার সকল সড়ক মহাসড়কে চলাচলকারী সিএনজিসহ সকল অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মহাসড়কে কোন অবৈধ যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কিছু করে দেখানো হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আমরা অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম দেখিনি। তাই আমরা ১৮ নভেম্বর হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেই। ২৮ নভেম্বরের মধ্যে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আমরা ২৯ নভেম্বর সকল বাস ও কোচ জেলা প্রশাসক ও স্ব স্ব উপজেলার ইউএনও’র কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেই। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ রবিবার সকল বাস ও কোচ জেলা প্রশাসক ও স্ব স্ব উপজেলার ইউএনও’র কাছে হস্তান্তর করা হবে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
রাতে সরেজমিন দেখা গেছে মটর মালিক গ্রুপের অসংখ্য বিরতিহীন বাস থানার সামনে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কে, প্রেসক্লাব সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বাকি বাসগুলো ভোরবেলা ও সকালে আনা হবে। ফলশ্রুতিতে অচল হয়ে পড়বে হবিগঞ্জ শহর।
অপরদিকে, গতকাল শনিবার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা (বিপিএম-পিপিএম) স্বাক্ষরিত জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলা সড়কে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে এবং মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সা, টমটম ও ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচল বন্ধ করতে গত ২২ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত জেলা পুলিশ সকল থানা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোস্ট স্থাপন করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে জেলায় ১৮১টি সিএনজি, ১৫৫টি অটোরিক্সা-টমটম, ৭২টি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা, ৯২টি মোটর সাইকেলসহ মোট ৫শ যানবাহান আটক করা হয়। এছাড়াও ১৭৫টি সিএনজি, ৮০টি অটোরিক্সা (টমটম), ৩৬টি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা, ১০২টি মোটর সাইকেলসহ সর্বমোট ৩৯৩টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মোটরযান আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলা পুলিশের এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানান পুলিশ সুপার।