মোহাম্মদ শাহ আলম ॥ বাহুবলের লামাতাসীতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাসিম মহালদারের বিরুদ্ধে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে বর্তমান শিক্ষকদের বাদ দেয়ার বিষয়ে তদন্ত চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাসিম মহালদার, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও তাদের পক্ষে-বিপক্ষে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় কলেজ প্রাঙ্গণে এ ঘটনাটি ঘটে।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন লামাতাসী এলাকার দলিল লেখক হাসিম মহালদার। স্কুল প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে শিক্ষক নিয়োগ দেন। সম্প্রতি স্কুলটি সরকারিকরণ হওয়ায় হাসিম মহালদার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অযোগ্য দাবি করে তাদের নিয়োগ বাতিল করে দেন। ফলে শিক্ষকরা বিষয়টি নিয়ে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার বাহুবল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান বিষয়টি তদন্ত করতে স্কুলে যান। তদন্ত চলাকালে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও এলাকাবাসী উপস্থিত হলে হাসিম মহালদার তাদেরকে বাঁধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘হাসিম মহালদার যে শিক্ষকদের বাদ দিয়েছেন তারা এই প্রতিষ্ঠানের জন্য শুরু থেকেই শ্রম দিয়ে আসছেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিক্ষার্থী ভর্তি করেছেন, নিজেরা মাথায় করে মাটি এনে প্রতিষ্ঠানের ভিট তৈরী করেছেন। এমনকি অনেকে নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে ঠিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এখন হাসিম মহালদার তাদের বিদায় করে টাকার বিনিময়ে অন্য লোকদের নিয়োগ দিতে চাচ্ছেন।’
স্কুলের শিক্ষিকা মুর্শিদা বেগমের ভাই সাধন মিয়া বলেন, ‘শিক্ষকরা ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আজ সেই অভিযোগের তদন্ত করতে আসেন শিক্ষা অফিসার। কিন্তু তদন্ত চলাকালে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও এলাকার সচেতন লোকজন এখানে আসলে হাসিম মহালদার তাদের বাঁধা দেন। এমনকি তিনি শিক্ষক ও এলাকাবাসীর প্রতি উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত হাসিম মহালদারের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করতে আসি। তদন্ত চলাকালে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি সমাধান করেন। তদন্তের বিষয়ে তিনি বলেন, সবকিছু যাচাই-বাছাই করে আমি ইউএনও মহোদয়ের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করব।’
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্নিগ্ধা তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তদন্তে গেলে একটু ঝামেলা হয়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমাকে অবগত করেছেন শিক্ষা অফিসার। তবে তদন্তে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি।’