স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর সবার আগে চিকিৎসকদেরই গণ্য করা হচ্ছিল সম্মুখ সমরের যোদ্ধা হিসেবে। তাদের বাইরেও করোনাকালে সাধারণ মানুষের জন্য জীবন বাজী ধরেছেন; এমন লোকের সংখ্যা হাতে গুণা। আর এই হাতেগুণাদের একজন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। অন্যরা যখন নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ঘর থেকে বের হননি, তখনও তিনি নির্বাচনী এলাকার গ্রাম-শহরে ছুটেছেন সকাল-সন্ধ্যা। দীর্ঘ আট মাস চালিয়েছেন সচেতনতামূলক প্রচারণা। অস্বচ্ছল কর্মহীনদের হাতে তুলে দিয়েছেন সরকারি ও ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সহায়তা। একবারও নিজের জীবনের পরোয়া করেননি। যে মানুষটি আজ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর সুস্থতা কামনায় জেলাজুড়ে মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও প্রার্থনা অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, করোনা সংক্রমনের শুরু থেকে আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই এলাকায় ঘুরেছেন এমপি আবু জাহির। কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের সময়ই তিনি ঘরে বসেননি। ‘সবাই ঘরে থাকুন, নিরাপদ জীবনযাপন করুন। নিজে পরিষ্কার থাকুন, অন্যকে পরিষ্কার থাকতে উৎসাহীত করুন। গাড়ি থেকে মাইকিং, পায়ে হেঁটে সচেতনতামূলক প্রচারণা, আবার কখনো সহায়তা বিতরণের ফাঁকে এভাবেই মানুষকে সচেতন করে গেছেন। শুধু শহর নয়, আটটি মাস ধরে গ্রামে গ্রামে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা ছুটেছেন তিনি। গত ২৫ অক্টোবর নমুনা পরীক্ষার জন্য দিলে পরদিন রিপোর্ট পজেটিভ আসে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এমপি আবু জাহিরকে সিএমএইচে নেওয়া হয়। তাঁকে নেয়ার জন্য হেলিকপ্টারটি হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহে আসলে স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভীড় জমান। সকলের মুখেই ছিল চিন্তার ছাপ। এপর জেলাজুড়ে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে মসজিদে মসজিদে দোয়া এবং মন্দিরগুলোতে প্রার্থনা করা হচ্ছে।
মিলাদ, দোয়া ও প্রার্থনা আয়োজনকারী কয়েকজন জানান- যে মানুষটি নিজের জীবনে কথা চিন্তা না করে ভয়াবহ এই বিপদে এলাকাবাসীর জীবন সুরক্ষিত রাখতে কাজ করেছেন। করোনা সংক্রমনের মাঝেও তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গেছেন, ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন। অথচ তিনিই আজ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। আল্লাহ যেন দ্রুত তাকে সুস্থতা দান করেন; সেজন্য আমরা প্রার্থনা করে যাচ্ছি।
গতকাল শনিবার সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী সুদীপ দাস জানান- এমপি আবু জাহির সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি রয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁর চিকিৎসা চলছে। তাদের সাথে কথা বলে পরবর্তী অবস্থা জানানো হবে।