মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী বাসযোগ্য জায়গার পরিমাণ বাড়ছে না। দিন দিন তা কমছে। সেই সাথে কমছে গাছপালার পরিমাণও। গাছপালা কমে যাওয়া মানে নির্মল বায়ু আর অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া। আমাদেরকে সুস্থভাবে বাঁচতে হলে গাছপালার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এজন্য বৃক্ষরোপনে এগিয়ে আসতে সকলের প্রতি আহবান জানান হবিগঞ্জ শহরের পুরান মুন্সেফী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী চৌধুরী মুরাদ ইবনে সালাম। তিনি বলেন- প্রবাসী বড় ভাই গোলাম আনিস চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় তিনি ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ছাদ বাগান শুরু করেন। শুরুতে তিনি ৫টি টবে গাছ রোপনের মাধ্যমে ছাদ বাগানের কার্যক্রম শুরু করেন। পরবর্তীতে বড় ভাই গোলাম আনিস চৌধুরীর অনুপ্রেরণা ও আর্থিক সহযোগিতায় তিনি এর পরিসর বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে তার ছাদ বাগানে ফল, ফুল, ঔষধি ও সৃজনাল সবজিসহ ১০১ প্রজাতির গাছ রয়েছে। ফল গাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বিভিন্ন প্রজাতির আম, আঙ্গুর, কমলা, মাল্টা, চায়না লিচু, কামরাঙা, পেঁপে, জাম্বুরা, বিভিন্ন প্রজাতির পেয়ারা, আনারস, জামরুল, লেবু, ড্রাগন, মিষ্টি আমড়া, বিলম্ব, ডালিম, কাঁঠাল, স্ট্রবেরী, মিষ্টি কূল, তরমুজ, আখ, সৃজনাল সবজির মধ্যে পুঁই শাক, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শিম, টমেটো, বেগুন, লাউ, ঢেঁড়স, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, ধনে পাতা, নাগা মরিচ, ঔষধি গাছের মধ্যে বাসক, তুলসী উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাতা বাহার ও ক্যাকটাস।
চৌধুরী মুরাদ ইবনে সালাম জানান- এ বছর তার বাগানে প্রচুর সৃজনাল সবজি হয়। সবজির ছবি তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিভিন্ন স্থান থেকে আত্মীয় স্বজনরা ফোন করে তাকে সবজি পাঠাতে বলেন। তিনি বাধ্য হয়ে ঢাকাসহ অনেক স্থানেই তার ছাদ বাগানের সবজি পাঠিয়েছেন। এতে সবজির চেয়ে কুরিয়ারের টাকা-ই তার ব্যয় হয়েছে বেশি। তার পরও স্বজনদের আবদার রাখতে পেরে তিনি খুশি। তিনি আরও জানান- তার ছাদ বাগানে যা কিছুই ধরে তা তিনি একা খান না। তাদের আশপাশে যারা রয়েছেন তাদের প্রত্যেকের বাসায় তিনি তা বন্টন করে দেন। এতে তিনি মনে এক অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করেন। আর তার সন্তানরা গাছ থেকে নিজ হাতে যখন ফল পেরে এনে খায় তখন তারা কিযে আনন্দ উপভোগ করে তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। তিনি যখন বাগানে কাজ করেন তখন তার সন্তানরাও আগ্রহী হয়ে তার সাথে গাছের পরিচর্যা করে থাকে। এ এক অন্যরকম অনুভূতি।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন- ভবিষ্যতে তিনি আরও বড় পরিসরে দৃষ্টিনন্দন বাগান করতে চান। পাশাপাশি তিনি নতুন করে কবুতর ও দেশী মোরগের খামার করতে চান। এজন্য তিনি সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন। পাশাপাশি যারা ইট পাথরের শহরে বাস করেন তাদেরকে ছাদ বাগান করার আহবান জানান।