লিটন পাঠান
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার লস্করপুর ভ্যালির পাঁচটি চা বাগান আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। গত বছরের দরপতন, চলতি বছরে করোনার সংক্রমণ ও লকডাউনের কারণে তিন-চার মাস নিলাম বন্ধ ছিল। ফলে সুরমা, তেলিয়াপাড়া, জগদীশপুর, নয়াপাড়া ও বৈকুণ্ঠপুর চা বাগান সংকটে পড়েছে। নিলামে বিক্রি না হওয়ায় গুদামে প্রচুর চা পাতা পড়ে রয়েছে। বাগান মালিকরা ব্যাংক ঋণ ও ধার-দেনা করে শ্রমিকদের রেশন তলব ও বাগানের অন্যান্য ব্যয় চালিয়ে আসছেন। বাগান ব্যবস্থাপকরা বলেন, এ বছর করোনাভাইরাস ও লকডাউনের কারণে তারা বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন। নয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন চা পাতা বিক্রি হচ্ছে না। গত তিন-চার মাস লকডাউন থাকার কারণে দেশের অভ্যন্তরে চা স্টল বন্ধ থাকায় চায়ের চাহিদা কমে যায়। এ কারণে নিলামে ক্রেতারা চা কিনতে আগ্রহী হয়নি। তিনি বলেন, এক কেজি চা পাতা উৎপাদন করতে খরচ পড়ে ২০০ টাকার ওপরে। কিন্তু নিলামে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক তছলিম উদ্দিন জানান, গত বছর অবৈধ পথে ভারত থেকে নিম্নমানের চা পাতা আসার কারণে দেশীয় চা বিক্রি হয়নি। এ বছর করোনার কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা কমে গেছে। এখন প্রতিটি চা বাগানে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি উপযোগী চা পাতা মজুদ রয়েছে। সরকার সহজ শর্তে ঋণ না দিলে বাগানগুলো অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। জগদীশপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিদ্যুৎ কুমার রায় জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারত থেকে চা পাতা আসার কারণে বাগানগুলো লোকসানের মধ্যে পড়েছে। এ বছর করোনার কারণে বাগানগুলো ফের লোকসানের মধ্যে পড়বে। সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কাশেম জানান, সরকার যদি জরুরীভাবে চা শিল্পকে প্রণোদনা কিংবা সহজ শর্তে ঋণ না দেয় তাহলে পাট ও চামড়ার মতো চা শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে। চা বাগান বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে।