কাজী মাহমুদুল হক সুজন ॥ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় কথিত গরু চুরির অভিযোগে মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে হারবাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্যাতনের বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গতকাল হাইকোর্টের সামন থেকে ফেসবুক লাইভে বলেন, এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। এই পরিবারের প্রতি চেয়ারম্যানের কুদৃষ্টি ছিলো বলে জানা যায়। আমি জানি না উনারা গরু চুরি করেছেন কি না। তবে এদেশে আইন আছে। চেয়ারম্যান নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া একটি বড় ধরনের অন্যায়। তিনি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, প্রশাসন যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে, না হলে তিনি বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনবেন’। তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই বিষয়টির সুষ্ঠু বিচার না হলে দেশের অন্যান্য চেয়ারম্যানরাও উৎসাহিত হয়ে এই রকম অপরাধের সাথে জড়িয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ আগস্ট দুপুরে চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের পহরচাঁদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার ছবি প্রকাশের পর ২২ আগস্ট বিষয়টি জানাজানি হয়। মা ও মেয়ে চকরিয়া হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার হারবাং তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার স্থানীয়রা ফাঁড়িতে খবর দিলে আমরা ফোর্স পাঠাই। আমাদের ফোর্স গিয়ে গুরুতর অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে আমাদের হেফাজতে নিয়ে আসে। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় এক ব্যক্তির দায়ের করা গরু চুরির মামলায় তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের উপর নির্যাতন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন অভিযোগ ওদের কেউ করেনি। আমাদের ফোর্স যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন সেখানে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে তাদেরকে আমাদের হেফাজতে নিয়ে আসাটাই প্রাধান্য দিয়েছি। আর ভুক্তভোগী কিংবা অন্য কেউ যদি অভিযোগ করে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
তবে ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, এক দফা মা-মেয়ের ওপর নির্যাতন চলার পর হারবাং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) পাঠিয়ে তাদেরকে রশিতে বেঁধে তার কার্যালয়ে এনে আবার নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। নির্যাতন শেষে চেয়ারম্যানের লোকেরাই তদন্ত কেন্দ্রে ফোন করে পুলিশ এনে মা-মেয়েকে মুমূর্ষু অবস্থায় তুলে দেন।