বেতনের দাবিতে রাজধানীতে পৌর কর্মচারীদের অবস্থান

মোঃ মামুন চৌধুরী ॥ সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতার দাবিতে বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে দেশের ৩২৮টি পৌরসভার কয়েক হাজার পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মধ্যে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর, নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ ও হবিগঞ্জ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
এ কারণে জেলার এসব পৌরসভার নাগরিকরা বিরাট সমস্যায় পড়েছেন। যেকোন কাজের জন্য পৌরসভায় গিয়ে সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। শহরের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সড়কে বাতি জ্বলছে না। অন্ধকারে পথচারীদের চলাচল করতে হচ্ছে। এসব মিলিয়ে হবিগঞ্জের ৬টি পৌরসভায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীদের দাবি, তারা ৫ থেকে ৭২ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া ছাড়াই অফিস করছেন। কোনো সময় পৌরসভার নিজস্ব আয় এলেই কেবল বেতন হয়, না হলে বছরের পুরো সময় চলে বেতন ছাড়া। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারিভাবে বেতন দেওয়ার আশ্বাস না আসবে ততক্ষণ তারা ঘরে ফিরবেন না বলে জানান। ১৪ জুলাই থেকে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
প্রতিদিনের ন্যায় ১৬ জুলাইও রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক ও ফুটপাতের ওপর কাগজ এবং তাবু বিছিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
অবস্থান ধর্মঘট পালনকারীরা জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ তাদের বেতনের জন্য নির্ভর করতে হয় পৌরসভার নিজস্ব আয়ের ওপর। যদি কোনো পৌরসভার আয় না থাকে তবে তাদের বেতন ছাড়াই চলতে হয়। এভাবে কারো কারো ৫ থেকে ৭২ মাস পর্যন্ত বকেয়া পড়েছে।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা থেকে ঢাকায় আন্দোলনে যাওয়া উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আলী আকবর বলেন, আমরা ৫ মাস ধরে বেতন পাই না। পৌরসভার যা আয় এর চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি হওয়া বাড়তি কোনো টাকা থাকে না, এ কারণে সব কর্মচারীরা বেতন ছাড়াই চলছি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ম ই তুষার বলেন, আমাদের ৩২৮টি পৌরসভার মধ্যে মাত্র ৩৩টি পৌরসভার বেতন-ভাতা নিয়মিত বাকিদের কারো ৭২ মাস পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে। এসব পৌরসভার ৩৫ হাজার কর্মচারী-কর্মকর্তাদের পৌর আয়ের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। আয় হলে বেতন হয় না হলে বেতন দেওয়া হয় না।
এতো বকেয়া হলে একজন কর্মচারী কীভাবে চলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৌর কর্মচারীদের সবার বাড়ি পৌর এলাকার মধ্যে। তাদের বাড়ি ভাড়া লাগে না, অন্য কোনো কাজ করে সংসারের খরচ চালাতে হয়।