স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সুরবিতানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ওস্তাদ বাবর আলী খান ছিলেন অনন্য প্রতিভার অধিকারী। সঙ্গীতে তাঁর ছিল অসাধারণ পান্ডিত্য। পাশাপাশি তিনি দক্ষতার সাথে বাজাতেন তবলা, সেতার, বেহালা, একতারা, দুতরাসহ ১৪টি বাধ্যযন্ত্র। একই সাথে সঙ্গীতসহ একাধিক বাধ্যযন্ত্রে পারদর্শী এমন বহুবিধ প্রতিভাবান ওস্তাদ সারাদেশে ছিলেন অনন্য। নিজে প্রচারবিমূখ ছিলেন বলে দেশ-বিদেশে তার খ্যাতি তেমনভাবে প্রসার পায়নি। সুরবিতান ছিল তার কাছে সন্তানতুল্য প্রাণের সংগঠন। ঢাকা-সিলেটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সঙ্গীত পরিচালক হওয়ার প্রস্তাব পেলেও তিনি সুরবিতানকে ছেড়ে কোন মোহে সাড়া দেননি। আমৃত্যু প্রাণের সঙ্গীত একাডেমী সুরবিতানের শিল্পীদের গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে গেছেন। ওস্তাদ বাবর আলীর খানের ছাত্র ছিলেন প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী সুবীর নন্দি, তিমির নন্দিসহ অনেকেই। যারা সঙ্গীতাঙ্গনে দেশ-বিদেশে নিজেদেরকে উদ্ভাসিত করেছেন আপন মহিমায়।
গতকাল রাতে সুরবিতান ললিতকলা একাডেমীতে ওস্তাদ বাবর আলী খানের স্মরণসভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। সুরবিতানের সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক গোলাম মোস্তফা রফিক। বক্তব্য রাখেন ওস্তাব বাবর আলী খানের তনয় আশরাফ আলী খান, আনন্দধারা একাডেমীর অধ্যক্ষ আবু মোতালেব খান, নজরুল একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালিব মমরাজ, তরুণ চলচ্চিত্র পরিচালক মোক্তাদির ইবনে সালাম, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সাংবাদিক রাশেদ আহমদ খান, সঙ্গীত শিক্ষক সরুজ কান্তি দাশ, বেবী সুত্রধর, শিক্ষিকা জেসমিনারা খানম চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা সুরবিতানের মঞ্চকে, ‘ওস্তাদ বাবর আলী মঞ্চ’ নামকরণের প্রস্তাব করেন এবং আগামীতে সাংস্কৃতিক ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে আরো বৃহত্তর পরিসরে স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে সুরবিতানের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানান। স্মরণসভায় বক্তব্য প্রদানকালে চলচ্চিত্র পরিচালক মোক্তাদির ইবনে সালাম ওস্তাদ বাবর আলী খানের জীবন কর্মের উপর একটি ডকুমেন্টারী তৈরির ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। পরে শিশুরা সঙ্গীত পরিবেশন করে। স্মরণসভার পূর্বে প্রয়াত বাবর আলী খানের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।