উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের লড়তে হবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাথে

এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর, চুনারুঘাট সদর ও মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ১৬ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নিজ নিজ ইউনিয়নের মোটর সাইকেল, ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহন দিয়ে শোডাউন করেছেন। সন্ধ্যায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে ৩টি ইউনিয়নের ২৭টি ওয়ার্ডের গ্রামাঞ্চলসহ হাট-বাজার। প্রত্যেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীরা বলছেন এটি স্থানীয় নির্বাচন। এখানে দল বড় কথা নয়। ভোটারা তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরই ভোট দিবেন। আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কারণে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে তাদের নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অপরদিকে বিএনপি ও জামাত এ নির্বাচনে প্রার্থী না দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান কে হবেন, কে কাকে দিবেন ভোট এ নিয়ে এখন চায়ের দোকানে আলোচনার ঝড় উঠেছে। ২৫ জুলাই সন্ধ্যায়ই জানা যাবে আগামী দু’বছরের জন্য কারা ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। এজন্য ২৫ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক এমনটা সকলের প্রতাশ্যা।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন মোল্লা জানান, সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ৫ প্রার্থীরই মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত ইঞ্জিনিয়ার জয় কুমার দাস (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সুবিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হবিগঞ্জ জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সজিব আলী (আনারস), হবিগঞ্জ পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি ও হবিগঞ্জ জেলা ব্রিকস্ ফিল্ড মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাওছার চৌধুরী (মোটর সাইকেল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সুবিদপুর ইউনিয়ন জামাতের আমির এসএম লুৎফুর রহমান কাশেম (চশমা) ও রোটারিয়ান মোহাম্মদ সেকুল ইসলাম সর্দার (ঘোড়া)। এখানে উল্লেখ্য এসএম লুৎফুর রহমান কাশেম ও মোহাম্মদ সেকুল ইসলাম সর্দার (ঘোড়া) প্রতীক চাওয়ায় তাদের মধ্যে লটারী দেয়া হয়। লটারীতে মোহাম্মদ সেকুল ইসলাম সর্দার ঘোড়া প্রতীক পান।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র রায় জানান, সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রইছ উল্লাহ (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরী রোমান (আনারস), শ্রমিক লীগ নেতা কাউছার আহমেদ (ঘোড়া), শেখ মোঃ আব্দুল মান্নান (মোটর সাইকেল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক নুর উদ্দিন সুমন (চশমা)।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, আন্দিউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ৬ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ শামছু মিয়া (নৌকা), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ফকির কাউছার (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ মিজানুর রহামন (আনারস), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতা চৌধুরী ফজলে ইমাম সুমন (ঘোড়া), মোস্তাক আহমেদ খান হেলাল (চশমা) ও নেপাল চন্দ্র দাস (সিএনজি অটোরিক্সা)। প্রসঙ্গত, আগামী ২৫ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান ও মাধবপুরের আন্দিউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আতিকুর রহমান পদত্যাগ করে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ওই ৩টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করে।