সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় মোতাচ্ছিরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এলাকাবাসীকে সুরক্ষার জন্য হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুতাং নদীর পানি দূষণ মোকাবেলায় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে পানি দূষণ প্রতিরোধ করা হবে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলায়তনে সুতাং নদীর পানি দূষণ রোধ তথা এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য করণীয় বিষয়ে হবিগঞ্জের সাংবাদিকের সাথে মতবিনিময় সভায় হবিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোতাচ্ছিরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম আরো বলেন- ছোট বেলা আমরা দেখতাম সুতাং নদী দিয়ে নৌকা চলাচল করছে। নদীতে এলাকার সাধারণ লোকজন ও জেলেরা মাছ শিকার করছেন। নদীতে প্রচুর কেছকী মাছের উৎপাদন হতো। প্রতিদিন কেছকী মাছ শিকার করতেন এলাকার জেলেসহ কৃষকরা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অলিপুরের অবস্থিত বিভিন্ন কোম্পানীর ক্যামিকেল মিশ্রিত পানি নদী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। দূষিত পানির কারণে নদীতে মাছের বংশ বিনষ্ট হয়ে গেছে।
দূষিত পানি বিষাক্ত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে এলাকার মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে এলাকার মানুষ ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হেচ্ছন। দুর্গন্ধে গর্ভবতী মায়েদের অনাগত সন্তান হুমকির মুখে পড়েছে। যার ফলে মায়েরা পেটে যে বাচ্চা ৯ মাস ধারণ করবেন তার স্বাভাবিক জন্ম হবে না। আর জন্মগ্রহন করার পর সেই বাচ্চা নানা রোগে আক্রান্ত হয়। নদীর দূষিত পানি পান করে এলাকার অসংখ্য গরু, হাঁস, মোরগ মারা গেছে। জমিতে কৃষকরা ধানের আবাদ করতে পারছেন না। জমিতে ধান চাষ করলেও ধানের চারাগাছগুলো মরে যায়। নদীর পানি দূষণের ফলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলাসহ লাখাই’র কৃষকদের ফসল হুমকির মুখে। পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে নদীর দূষিত হাওরে প্রবাহিত হওয়ার কারণে হাওরে মাছের উৎপাদন হচ্ছে না। যার ফলে বর্ষা মৌসুমেও মানুষ সুস্বাদু মাছ আর খেতে পাচ্ছেন না। পরিবেশ অধিদপ্তর দেশের পরিবেশ রক্ষায় তরল বর্জ্য যাতে নদ-নদীর পানিকে দূষিত করতে না পারে সে জন্য তরল বর্জ্য নির্গমনকারী সকল শিল্পে ইটিপি বাধ্যতামূলক করলেও অলিপুরের কোন কোম্পানীই ইটিপি বাস্তবায়ন করছে না। যার ফলে সুতাং নদীর পানি দূষিত হচ্ছে।
মোতাচ্ছিরুল ইসলাম বলেন- আমাদের আন্দোলন কোন কোম্পানী বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, যারা নদীর পানি দূষণের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য আমাদের আন্দোলন। এই আন্দোলনে সকলকে শরীক হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি হারুনুর রশিদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দৈনিক জনকণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিনের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান আউয়াল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস আরা, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, সাবেক সভাপতি মোঃ ফজলুর রহমান, সাবেক সভাপতি রুহুল হাসান শরীফ, বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তাফা রফিক, শোয়েব চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নির্মল ভট্টাচার্য রিংকু, হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি রাসেল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি প্রদীপ দাশ সাগর, বাংলাদেশ পরিবেশন আন্দোলন (বাপা) জেলা সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক অনুপ কুমার দেব মনা, রাজিউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক আহমেদ শেখ কামাল, প্রেসক্লাব সদস্য চৌধুরী মাসুদ আলী ফরহাদ, রাশেদ আহমদ খান প্রমূখ।