হবিগঞ্জ শহরে কেয়া চৌধুরীর অনুসারীরা দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শায়েস্তাগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি কেয়া চৌধুরীর উপর হামলার একদিন পর হবিগঞ্জ শহরেও তাঁর অনুসারীরা বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েছেন। এ ঘটনা নিয়ে হবিগঞ্জ শহরে আওয়ামী পরিবারে তোলপাড় চলছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় বিজয় দিবসের এক আলোচনা সভায় সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়ার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন কেয়া চৌধুরী। এ সময় কেয়া চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরীর অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন সভায় উপস্থিত আওয়ামী পরিবারের সদস্য দৈনিক আমার হবিগঞ্জ সম্পাদক সুশান্ত দাস গুপ্ত। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জ শহরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ বনাম স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির আয়োজন করে। কেয়া চৌধুরীকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে হবিগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় উভয়পক্ষ হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সামনে মুখোমুখি হলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ছবি তুলতে গিয়ে দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচারের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার জাকারিয়া চৌধুরীসহ অন্তত ৫ জন আহত হন। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা জেলা পরিষদের অভ্যন্তরে গিয়ে আশ্রয় নেন। কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পুলিশ তাদেরকে নিরাপদে আশ্রয় নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এ নিয়ে বিকাল থেকেই শহরে উত্তেজনা বিরাজ করে এবং শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে যাত্রীদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী সাংবাদিকদের বলেন- মঙ্গলবারের ঘটনার পর কেয়া চৌধুরীর সমর্থকরা ফেসবুকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে। এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় এই ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন। যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিয়ে তিনি চলে যান।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান জানান, শায়েস্তাগঞ্জে সাবেক এমপি কেয়া চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবক লীগ বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিলে যুবলীগ পাল্টা অবস্থান নেয়। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব দাশ পুরকায়স্থ জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা চেষ্টা চালিয়েছেন।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম এবং সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. মাসুক আলীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এ ঘটনার পর রাতে শহরের ডাকঘর এলাকায় পথসভা করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ। পথসভায় বক্তৃতা করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান ও দৈনিক আমার হবিগঞ্জ সম্পাদক সুশান্ত দাসগুপ্ত। পরে তারা শহরে মিছিল করে।