অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা বললেন- অনেক সময় মা সন্তানকে গোপনে টাকা দিয়ে থাকেন, যার ফলে দ্রুতই তার অসৎ সঙ্গী জুটে যায়। সন্তানের মাদকাসক্তের মূলে রয়েছে মা কর্তৃক গোপনে বাড়তি অর্থ প্রদান এবং সন্তানের অসৎ কর্মের বিষয় পিতার কাছে গোপন করে যাওয়া
নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম পিপিএম (সেবা) বলেছেন- দেশ গঠনে যেমন নারীরা এগিয়ে তেমনি পরিবার গঠনেও নারীরা ম্যানেজারের ভূমিকা পালন করতে পারেন। মেয়েদেরকে শিক্ষিত করতে হবে, তাই অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদেরকে বিয়ে দিবেন না। কম বয়সে বিয়ে দিলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। মেয়েরা রাজপুত্র মনে করে মোবাইল ফোনে যে ছেলেটির সাথে প্রেম করে, পরে দেখতে পায় সে ছেলেটি রাজমিস্ত্রী কিংবা আরো নি¤œশ্রেণীর। এমন ঘটনাও সমাজে অহরহ ঘটছে। এর জন্য দায়ী পরিবার। মোবাইল ফোন আঠারো বছরের নিচে ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না, মোবাইল ফোন ব্যবহারে একটি সন্তান খারাপ হয়ে যায়, ইন্টারনেটে ভাল-খারাপ দুটোই আছে। সন্তানকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে মায়ের ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের নারী নির্যাতন, মাদক ও দাঙ্গা থেকে বিরত রাখতে সকল মায়েরা ভূমিকা রাখলেই ভাল সন্তান ও শান্তির বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। একজন সচেতন, বিজ্ঞ মা-ই পারেন তার সন্তানকে যথার্থ মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিতে। একজন শিশুর সবচেয়ে বড় সাথী হচ্ছে তার মা। তাই পরিবারের দিকে একজন মায়ের খোঁজ নিতে হবে সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে চলাফেরা করে, সচতেনতা বাড়াতে হবে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চুনারুঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন রোধ ও আদর্শ সন্তান গঠনে মায়ের ভূমিকা শীর্ষক সচেতনতামূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পুলিশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় হবিগঞ্জকে একটি আদর্শ জেলায় রূপান্তরিত করতে পুলিশ প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে জনসচেনতামুলক সভা কার্যক্রম তদারকির কারণে মারামারি অনেকটা কমে গেছে। কমেছে মামলার সংখ্যাও। যেখানে মাসে মামলা হত ২শ’ থেকে আড়াইশটি, এখন মামলা কমে ১৩৪টি হয়েছে। এখন গ্রামগঞ্জের মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারছে। এসব সচেতনতামূলক কাজের ফল।
চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজমুল হকের সভাপতিত্বে ও ওসি (তদন্ত) চম্পক দাম এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা। তিনি বলেন, সন্তান তার মায়ের কাছে যতখানি ফ্রি থাকে পিতার কাছে ততটা নয়। তাই দেখা যায় সন্তানের চলাফেরা-ওঠাবসা ও সখ্যতা মায়ের সঙ্গেই বেশি। আবার অনেক সময় মা সন্তানকে গোপনে টাকা দিয়ে থাকেন, যার ফলে দ্রুতই তার অসৎ সঙ্গী জুটে যায়। সন্তানের মাদকাসক্তের মূলে রয়েছে মা কর্তৃক গোপনে বাড়তি অর্থ প্রদান এবং সন্তানের অসৎ কর্মের বিষয় পিতার কাছে গোপন করে যাওয়া। এসবই ঘটে থাকে সন্তানের প্রতি মায়ের দুর্বলতা ও অতি আদরের ফলশ্রুতিতে। আদর্শ মায়ের কোলে জন্ম নেয় আদর্শ শিশু।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মাধবপুর সার্কেল সিনিয়র এএসপি মোঃ নাজিম উদ্দিন, শিল্পপতি মালেক জাপানী, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: কাউছার বাহার, আশা অতিঃ ডিভিশনাল ম্যানেজার কামাল মিয়া চৌধুরী, তথ্য সেবা কর্মকর্তা সোনালী রানী, ঘরগাঁও স্কুলের প্রধান শিক্ষক পপি রানী দে, সাজিদুল হক চৌধুরী, মো: কামাল হোসেন খান প্রমুখ। পরে পুলিশ সুপার অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।