শিক্ষার্থীরা বলল, মাঝেমধ্যে গাছের পিঁপড়া ও পাতা পড়ে তাদের শরীরে। শুধু তাই নয় প্রচন্ড রোদে তাদের কষ্ট হয়। বৃষ্টি হলে ক্লাস বন্ধ থাকে। এ অবস্থায় মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে

স্টাফ রিপোর্টার, বানিয়াচং থেকে ॥ হবিগঞ্জের বানিয়াচং নজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে গাছতলায়। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে স্কুলের ভবন নির্মাণ কাজে দেরি হচ্ছে। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এদিকে শিশুরা পাঠগ্রহণ করছে খোলা আকাশের নিচে গাছতলায় প্লাস্টিকের বস্তায় বসে। এমন পরিবেশে পাঠদানে অসুস্থ হয়ে পড়েছে অনেক শিশু শিক্ষার্থী। অনেকে আবার স্কুলে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে ‘মেসার্স উজ্জ্বল মিয়া’ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ পায়। এক বছর সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ২০১৮ সনের এপ্রিল মাসে নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হলেও জুলাই মাসে কাজ শুরু হয়। ঠিকাদার এক বছরে কাজ তুলেছে ৫৫ ভাগ। এদিকে শ্রেণিকক্ষের অভাবে গাছতলায় বসে চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। স্কুলে ১১৮ জন শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রামের কৃপেন্দ দাশের বাড়ির সামনে খোলা আকাশের নিচে প্লাস্টিকের বস্তায় বসে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। সরু ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা বলেছে, মাঝেমধ্যে গাছের পিঁপড়া ও পাতা পড়ে তাদের গায়ে। গায়ে রোদও লাগে। বৃষ্টি হলে ক্লাস বন্ধ থাকে।
শিক্ষক শেফালি আক্তার ও কল্পনা দাশ জানান, খোলা জায়গা। উপকরণ ব্যবহার করা য়ায় না। মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পড়াশুনায় মনোযোগও নষ্ট হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক পীতাম্বর চন্দ জানান, কৃপেন্দ দাশের পরিত্যক্ত বাংলাঘরটি সøীপ বরাদ্দ থেকে ও ম্যানেজিং কমিটির সহায়তায় মেরামত করে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখি। ছোট্ট এ ঘরে এক সাথে দুটি শ্রেণির ক্লাস নেয়া সম্ভব হলেও অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পাঠদান করে বাহিরে বসে। এছাড়া ঝড়-তুফানে বাংলাঘরের বেড়া উড়ে গেছে। এই অস্বস্থিকর পরিবেশের কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে মানসম্মত শিক্ষা বিলিয়ে দিতে পারছি না।
স্কুল কমিটি বলেছে, নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের গাফিলতি রয়েছে। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ করছে না। মাঝে মাঝে ৩-৪ জন শ্রমিক দ্বারা কাজ করায়। ছাদ ঢালাইয়ের এক মাসের ওপরে কাজ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আল নূর তারেক বলেন, স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তিন মাস দেরিতে কাজ শুরু হয়। ঠিকাদার আরও তিন মাস সময় চেয়েছে। স্কুল কমিটি পাঠদানে বিকল্প ব্যবস্থা চালু করলে কিছু টাকা পয়সা লাগলে দেয়া যাবে।