মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জের তরুণীকে মৌলভীবাজারে অপহরণ করে ধর্ষণ চেষ্টায় চার আসামির মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নিতেশ্বর এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে কামাল মিয়া (২৩) এবং প্রাইভেটকার চালক গিয়াস নগর ইউনিয়নের শাহপুর এলাকার মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২৪)। মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত অনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর রামলোহ একলার ভুক্তভোগী জনৈকা তরুণীর বাবাকে হাসপাতালে চিৎসাধীন রেখে তরুণীর মামা জহিরুল ইসলাম তাকে ভৈরব বাজার পাঠানোর জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের পুরাতন গেটের সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় একটি প্রাইভেটকার আসে। প্রাইভেটকারটি ভৈরব বাজারের দিকে যাবে। কারটি থামে এবং চালক জানায়, সে লোকাল যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় কারের পেছনের সিটে যাত্রী বেশে একজন বসা ছিলেন। মামা জহিরুল ইসলাম ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে ভাগনিকে প্রাইভেটকারে তুলে দেন। ভাগনিকে গাড়িতে তুলে দিয়ে মামা যখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তরুণীর অসুস্থ বাবার কাছে ফিরে যান তার কিছু সময় পর তরুণীর নম্বর থেকে মামা জহিরুলের মোবাইলে কল আসে। কান্না জড়িত কন্ঠে মেয়েটি বলতে থাকে ‘আমাকে বাঁচাও আমাকে ড্রাইভার নামিয়ে দিচ্ছে না, আমাকে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে। ’
এ সময় মামাকে লাইনে রেখে চালককে উদ্দেশ্য করে মেয়েটি আকুতি করে বলতে থাকে ‘আল্লাহ’র দোহাই আমাকে নামিয়ে দেন, আমার আব্বা হাসপাতালে মারা যাবে যদি আমার কিছু হয়।’ এর পর আসামিরা মোবাইল কেড়ে নিয়ে কারের ভিতরেই মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা ওই তরুণীতে ধর্ষনের জন্য দেওড়াচরা চা বাগানে নিয়ে যায়। এ সময় পূর্বের দুই অপহরণকারীর সাথে আরো ২ জন যুক্ত হয়। মোট ৪ জন মেয়েটিকে গণধর্ষণের প্রস্তুতি নেয়। এমন সময় পুলিশের কয়েকটি টিম বাগানে অভিযান চালায়। প্রায় ৩ ঘণ্টার অভিযানে রাত ৪টার দিকে কমলগঞ্জ উপজেলায় দেওড়াচরা চা বাগান থেকে মেয়েটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। রবিবার সকালে মেয়েটি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করে।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, রবিবার সকালে ওই তরুণী বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার ৪ আসামির মধ্যে চালকসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দ্রুত পলাতক দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হবে। গ্রেফতারের স্বার্থে অপর ২ আসামির নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।