প্রতিবাদে স্বপরিবারে আমরণ অনশন ॥ পুলিশের আশ^াসে প্রত্যাহার

স্বপন বণিক ॥ জায়গা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর বাজারে প্রিয়তোষ সরকার রানু নামে এক ব্যবসায়ীকে সমাজচ্যুত করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ী প্রিয়তোষ সরকার রানু এবং তার পরিবারের ৩ সদস্য আমরণ অনশন করছেন। রবিবার সকাল থেকে তারা তালাবদ্ধ নিজ দোকানের সামনে একটি ব্যানার লাগিয়ে এ অনশন কর্মসূচি পালন করেন। অনশন পালনকালে যে ব্যানার ব্যবহার করা হয় তাতে লেখা ছিল ‘সামাজিক কু-প্রথার মাধ্যমে সমাজ থেকে বহিস্কার ও জোরপূর্বক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে তালাবদ্ধ করার কারনে আমরণ অনশন’। এ সময় ব্যবসায়ী প্রিয়তোষ সরকার রানু সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার পল্লী চিকিৎসক শৈলেষ গংদের সাথে জায়গা নিয়ে পূর্ব বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে সম্প্রতি শৈলেষ গং সালিশ বৈঠক করে প্রিয়তোষ সরকার রানুর পরিবারকে সমাজচ্যুত করে এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে দেয়।
গত ৭ নভেম্বর এলাকার প্রভাবশালীদের নিয়ে গ্রাম্য বৈঠক তার পরিবারের সকল সদস্যদেরকে সামজচ্যুত করে ও পাহারপুর বাজারে কল্প ট্রেডার্স নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জোরপূর্বক তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। তিনি আরো বলেন, বদলপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের খুচরা সার ডিলার তিনি। দোকানে কয়েক লাখ টাকার মালামাল রয়েছে। এলাকার সমাজপতিদের নিকট ধর্ণা দিয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় পাহারপুর বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে স্বজনদের নিয়ে আমরণ অনশনে বসেন। দুপুরে প্রিয়তোষ সরকারের অনশনের খবর পেয়ে আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস দেয়। পরে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি সুতলাল দাশ পানি পান করিয়ে তার অনশন ভঙ্গ করান
অভিযুক্ত কুঞ্জুলাল দাস বলেন, প্রিয়তোষ সরকার রানু এলাকার মন্দিরের জায়গা কৌশলে তার নামে নিয়ে নেন। ওই জায়গা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য একাধিক বার গ্রাম পঞ্চায়ের বৈঠক করে জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। তিনি মন্দিরের জায়গা আত্মসাত করার জন্য সমাজচ্যুতের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে অনশনে বসেন। আমরা তাকে সমাজচ্যুত করিনি।
আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি মোশারফ হোসেন তরফদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ প্রেরণ করে অনশন ভাঙ্গানো হয়েছে। সমাজে এটি হতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ বেআইনী। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, যারা ওই ব্যবসায়ীর দোকানে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যায় তাদের কাছ থেকে ছাবি সংগ্রহ করে প্রিয়তোষ সরকার রানুকে দেয়া হয়েছে। সে দোকান খুলেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ নাইমা খন্দকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে সমাধানের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বদলপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুশেনজিৎ চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে আজমিরীগঞ্জ বানিয়াচং আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের মাধ্যমে সালিশে নিষ্পত্তি করা হবে।