পেঁয়াজের কেজি ১৭০ টাকা ॥ লোকসানের ভয়ে অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আনছেন না

মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। মুদীমাল দোকানে খুচরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। কোথাও কোথাও অবশ্য ১৮০ টাকা কেজি দরেও পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে। কিন্তু তারপরও অনেক দোকানেই পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। একটি বিশ^স্থ সূত্র জানায়, লোকসানের ভয়ে অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ কিনে আনছেন না। এদিকে গতকাল রাতে একটি চক্র হঠাৎই গুজব ছড়ায় দেশে লবনের সংকট দেখা দিয়েছে। লবনের দাম অনেক বেড়ে গেছে। এর প্রভাব দেশের বিভিন্ন স্থানে পড়লেও হবিগঞ্জে তার প্রভাব পড়েনি।
পেঁয়াজের পাইকারী বিক্রেতা হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার নারকেল হাটার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গতকাল সোমবার তিনি চট্টগ্রামে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন পেঁয়াজ ১৩০/১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হবিগঞ্জ শহরেও খুচরা বিক্রি হয়েছে ১৭০/১৮০ টাকা কেজি দরে। তিনি ধারণা করছেন কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম আরো কমবে। তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গতকাল রাতে হঠাৎ একটি চক্র গুজব ছড়ায় দেশে লবণের সংকট চলছে। তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে লবণের দাম বেড়ে গেছে। তাদের গুজবে কোন কোন স্থানে কাজও হয়েছে। দেশের অনেক স্থানে এক লাফে লবনের দাম পৌঁছে গেছে ১০০ টাকার ওপরে। সিলেটে প্রতি কেজি লবণ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। তবে ওই গুজব হবিগঞ্জে কোন প্রভাব ফেলেনি। গতকাল রাতেও শহরের বিভিন্ন দোকানে প্যাকেটজাত লবণ বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা কেজি।
শহরের চৌধুরীবাজারের মুদিমাল ব্যবসায়ী মামুন আহমেদ জানান, গতকাল সকালে বিভিন্ন দোকানে ২০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। তবে বিকেলে এ দাম কমে যায়। বিকেলে ১৭০/১৮০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। পিঁয়াজের দাম আরো কমতে পারে এ আশঙ্কায় অনেক ব্যবসায়ী আপাতত দোকানে পেঁয়াজ আনছেন না। যারা আনছেন তারা সামান্য পরিমাণে আনছেন শুধুমাত্র ক্রেতা ধরে রাখতে। তবে বিকেলের দিকে রসুনের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানান তিনি। বিকেলে এলসির বড় রসুন ১৬০ টাকা এবং দেশী রসুন ১৮০/১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
হবিগঞ্জ শহরের সবুজবাগ এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ আলমগীর জানান, গতকাল সকালে তিনি ১৮০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। বিকেল থেকে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। তার ধারণা পেঁয়াজের দাম আরো অনেক কমবে। তাই তিনি দোকানে আর পেঁয়াজ কিনে আনছেন না। কারণ হঠাৎ দামের বড় পরিবর্তন হলে তাকে লোকসান গুণতে হবে। তিনি বলেন, এমন আশঙ্কায় আরো অনেক ব্যবসায়ীই দোকানে পেঁয়াজ আনা আপাতত বন্ধ রেখেছেন। তবে রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান তিনি। তার দোকানে এলসির বড় রসুন ১৫০ টাকা ও দেশি রসুন ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বলে জানান। তবে তিনি শুনেছেন বাজারে রসুনের দাম বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম একদিনের ব্যবধানে অনেক বেড়ে যায়। এরপর থেকে দাম না কমে প্রায় প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।