রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রালের জাঁকজমকপূর্ণ অভিষেক

এসএম সুরুজ আলী ॥ রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রালের জাঁকজমকপূর্ণ ৬ষ্ঠ অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টায় হবিগঞ্জ শহরের আমিরচাঁন কমপ্লেক্সের মহিমা কমিউনিটি সেন্টারে অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রোটারী ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮২ এর গভর্ণর প্রিন্সিপাল লে.কর্ণেল (অব) এম আতাউর রহমান পীর। বক্তৃতা করেন ক্লাব এডভাইজার রোটারিয়ান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, খোয়াই জোনের লেফটেন্যান্ট গভর্ণর পিপি শামীম আহছান, রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জের প্রেসিডেন্ট মোদারিছ আলী টেনু, পিপি তবারক এ লস্কর। অনুষ্ঠানে প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি রোটারিয়ান হারুনুর রশিদ চৌধুরী। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল হক। গীতা পাঠ করেন রোটারিয়ান শিউলী রানী দাশ। ইনভোকেশন পাঠ করেন রোটারিয়ান অ্যাডভোকেট সুদীপ কান্তি বিশ্বাস। প্রথম পর্বে রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রালের ২০১৮-১৯ মেয়াদের কমিটির কার্যক্রমের উপর বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন সংগঠনের সেক্রেটারি রোটারিয়ান মোঃ জাহিদুল ইসলাম। এরপর রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রালের সদস্যবৃন্দ ও তাদের পরিবারকে পরিচয় করিয়ে দেন রোটারিয়ান শাহ ফখরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে নয়া প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান আলহাজ¦ সিরাজুল ইসলামের গলায় প্রেসিডেন্ট কলার পরিয়ে দিয়ে তাকে রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত করেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান হারুনুর রশিদ চৌধুরী। নয়া প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় পর্বে বক্তব্য রাখেন অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে একটি সুন্দর স্যুভেনীর প্রকাশিত হয়। স্যুভেনীরের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে ক্লাব সদস্যদের উপস্থিতির পার্সেন্টেজ তুলে ধরেন সার্জেন্ট এট আর্মস রোটারিয়ান টিপু চৌধুরী। ভোট অব থ্যাঙ্কস প্রদান করেন গভর্ণরস স্পেশাল এইড রোটারিয়ান ডাঃ মোঃ জমির আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্ণর রোটারিয়ান এম আতাউর রহমান পীর বলেন, রোটারিয়ানরা মানবতার কল্যাণে সারা বিশে^ কাজ করে যাচ্ছে। বিশ^ থেকে পোলিও নির্মুল করতে ১৮০ কোটি ইউএস ডলার খরচ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দরিদ্র মানুষের সেবায় রোটারী ক্লাবগুলো কাজ করছে। আমরা দরিদ্র মানুষের ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছি। সেনেটারী লেট্রিন দিয়েছি। সিলেটে হাসপাতাল নির্মাণ করেছি। সেখানে স্বল্প টাকায় মানুষ চিকিৎসা নিতে পারছেন। আমাদের সিলেট বিভাগে ৪টি এ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ১টি এ্যাম্বুলেন্স হবিগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতালে বরাদ্দ দেয়া হবে। দেশের কল্যাণে অনেক কাজ করেছি। কিন্তু এর প্রচার হচ্ছে না। রোটারীর কার্যক্রম প্রচার করতে হবে। নতুন প্রজন্ম রোটারী ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী। তাদেরকে ক্লাবগুলো সম্পৃক্ত করতে হবে। সারা দেশে ১০ হাজার রোটারিয়ান রয়েছে। আগামীতে ১৭ হাজার রোটারিয়ান করতে হবে। ১৭ হাজার রোটারিয়ান তৈরি করতে পারলে দেশে রোটারী সাবজোন প্রতিষ্ঠিত হবে। সাব জোন করলে বাংলাদেশে একজন পরিচালক মনোনীত করা হবে। তিনি বলেন, বিশে^র অন্যান্য রাষ্ট্রে রোটারিয়ানদের সংখ্যা কমলেও ভারত বাংলাদেশে রোটারিয়ানদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই রোটারিয়ানদের পরিবারের সদস্যদের রোটারী ক্লাবের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের এ ক্লাবের মানবতা মূলক কর্মকান্ড সম্পর্কে বুঝাতে হবে। মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং সহমর্মিতা নিয়ে রোটারিয়ানদেরকে আরো বেশি মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। ভিন্ন কিছু সমাজকে দেওয়ার মাধ্যমে সমাজকে পরিবর্তনের চিন্তা করতে হবে। দেশ ও জাতির কল্যাণে রোটারিয়ানরা যদি আরো বেশি আন্তরিকতা এবং দক্ষতার সাথে কাজ করে, এদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো নিজেদের আশ্রয় খুঁজে পাবে। তিনি রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রালের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে নতুন রোটারিয়ান জেলা পরিষদের সদস্য মনির হোসেন খান, বানিয়াচং উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহেনারা আক্তার বিউটি, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হেনা বেগমকে পিন পরিয়ে দেন ডিজি রোটারিয়ান এম আতাউর রহমান পীর। অনুষ্ঠানে ক্লাবের মিটিংয়ে শতভাগ উপস্থিত সদস্যদের শুভেচ্ছা ক্রেস্ট দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দকে উপহার প্রদান করা হয়। সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন অনুষ্ঠানটিকে আকর্ষণীয় করে তুলে। সবশেষে সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়।