সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও দাম বাড়ছে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও পণ্যের দামে লেগেছে আগুন। সবজিসহ ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত শ্রেণির মানুষ পড়েছেন বিপাকে। হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, মাধবপুর ও লাখাই উপজেলাসহ প্রায়ই সবকটি উপজেলার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম উঠানামা হচ্ছে। কোনো নির্দিষ্ট দামের নিশ্চয়তা নেই। একই পণ্য এক দোকানে কম দামে, অন্য দোকানে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
হবিগঞ্জ শহরের চাষি বাজার, চৌধুরী বাজার, শায়েস্তানগর বাজার ঘুরে দেখা যায় সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। বর্তমানে প্রতি কেজি বরবটি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ও ধুন্দুল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, গোল বেগুন ১৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া আকার ভেদে ১০০ থেকে দেড়শ টাকা, মূলা ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা এবং আগাম শিম বিক্রি হচ্ছে দেড়শ থেকে ২০০ টাকায়। কাঁচা মরিচ ৩শ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে দাম কিছুটা কমে ১৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, স্থানীয়ভাবে সবজির উৎপাদন কমে গেছে। ফলে বাইরের জেলা থেকে বেশি দামে পণ্য কিনে আনতে হচ্ছে। খুচরা বাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। আর সরু চাল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। মসুর ডাল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা কেজি, মোটা ১১০ থেকে ১১৫ টাকা।
ক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আগে ৫০০ টাকায় সপ্তাহের বাজার হতো, এখন একদিনেই শেষ হয়ে যায়। মাছ-মাংস তো দূরের কথা, সবজিও এখন বিলাসপণ্য।’
হবিগঞ্জ বাজারে চাষের রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ ক্ষেত্র বিশেষে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া ২৪০, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, নদীর চিংড়ি ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, সোনালি ৩০০ টাকা। আর ডিমের প্রতি ডজন ১৫০ টাকার কাছাকাছি। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা।
রিকশাচালক নূরুল ইসলাম বলেন, ‘দিনে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কামাই করি। ভাড়ায় ঘর নিছি ২ হাজার ৫০০ টাকায়। এখন বাজারে ডুকলেই ভয় লাগে। মাসে একদিন মাংস খাইতাম, এখন কয়েক মাসেও পারি না।’
গৃহপরিচারিকা রহিমা বেগম বলেন, ‘মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পাই, সব বাজারে দিয়া শেষ। বাচ্চাদের দুধ, স্কুলের খরচ কিছুই সামলাইতে পারতাছি না।’
শায়েস্তানগর বাজারের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘পাইকারি বাজারে পণ্য কমে আসছে, ভাড়া খরচও বেশি। তাই দাম বাড়ে। আমাদের লাভ অনেক না, সমস্যা পুরো সিস্টেমে।’