ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছেন শামছুল হুদা-আলমগীর প্যানেলের প্রার্থীরা ॥ ভোটার তালিকা বাতিলের দাবি করে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন রহমান-ফয়সল প্যানেল

মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ও আইনী বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ব্যকস) হবিগঞ্জের কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে (সাবেক বিয়াম স্কুল ভবন) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ভোট প্রদানে অংশগ্রহণ করার জন্য ভোটারদের প্রতি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছে। এদিকে আইনী জটিলতার কারণে প্রতীক বরাদ্দের পরও জমে উঠেনি নির্বাচন। ভোটার তালিকা গঠনতন্ত্র বহির্ভূত বা নিয়ম বহির্ভূত ভোটার বানানো হয়েছে অভিযোগ এনে প্রতিকার চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান ও মোঃ রুহুল আমিন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন ভোটার তালিকায় দেখা গেছে পৌর এলাকার মালিকানাধীন তাদের কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই বা কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অংশীদারও নয় কিংবা তাদের পৌরসভার কোন প্রকার ট্রেড লাইসেন্সও নেই। এছাড়া দোকানের কর্মচারিদেরকেও সদস্য করা হয়েছে। এ অভিযোগের পরও থেমে থাকেনি নির্বাচনী কার্যক্রম। মনোনয়ন দাখিল যাচাই-বাছাই ও সর্বশেষ ৯ সেপ্টেম্বর ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন কমিশনার প্রাথমিকভাবে ১৫ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
এদিকে ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হাজী আব্দুর রহমান তালুকদার ভোটার তালিকা সংশোধন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন স্থগিতাদেশ চেয়ে সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে কেন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করা হইবে না নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। এছাড়া নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। পরে আদালতে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ১৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচনে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এ প্রেক্ষিতে সভাপতি প্রার্থী হাজী আব্দুর রহমান তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মীর একেএম জমিলুন্নবী ফয়সল ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা জজ আদালতে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিজ্ঞ জেলা জজ তাদের আপিল নামঞ্জুর করেন। এরপর ২১ সেপ্টেম্বরের নির্বাচন বর্জন করেন হাজী আব্দুর রহমান তালুকদার ও মীর একেএম জমিলুন্নবী ফয়সল। আইনী জটিলতার কারণে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের কাছে যেতে পারেননি। শহরে তাদের নির্বাচনী পোস্টারও তেমন চোখে পড়েনি। তবে আইনী জটিলতার অবসান হওয়ায় গতকাল সভাপতি প্রার্থী মোঃ শামছুল হুদা ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোঃ আলমগীর ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে। ভোটারদের কাছে তারা ভোট ও দোয়া চেয়েছেন। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে তাদের সমর্থকদেরকে রঙিন পোস্টার লাগাতে দেখা গেছে। যাতে প্রার্থীরা ভোটারদের ভোট, দোয়া-আশির্বাদ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন। একপক্ষ অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করলেও আইনী জটিলতা অতিক্রম করে নির্বাচন করতে পারায় অপরপক্ষের প্রার্থী, কর্মী-সমর্থকদের মাঝে বিজয়ের আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে।
প্রসঙ্গত, যে ১৫ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তারা সকলেই শামছুল হুদা-আলমগীর প্যানেলের প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে- আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গোপন ব্যালটে যে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সেই ব্যালট পেপারে প্রতিদ্বন্দ্বী সকল প্রার্থীর নাম ও প্রতীক থাকবে। যারা নির্বাচন বর্জন করেছেন তাদের নাম ও প্রতীকও ব্যালট পেপারে থাকবে। তারা নির্বাচন বর্জন করলেও নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী এখন আর কোন প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে যাবার কোন সুযোগ নেই।