স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামের দু’পক্ষের সম্পত্তি নিয়ে ২০ বছরের বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এ বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম। এর মধ্যে আবারও ২টি পরিবারের মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন হলো।
পুলিশ সূত্র জানায়, ছোট বহুলা গ্রামের দিদার আলীর ছেলে লোকমান মিয়ার সাথে একই গ্রামের গোলাপ মিয়া গংদের সাথে প্রায় ২০ বছর ধরে বাড়ি সংলগ্ন খাল ও বাড়ির জমি দখল নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এছাড়াও আফিয়া খাতুনের কাছ থেকে ২০ বছর পূর্বে ২ শতক জমি ক্রয় করেন অভিযোগকারী লোকমান। কিন্তু আফিয়া বিক্রিকৃত ২ শতক জায়গা লোকমানকে রেজিস্ট্রি করে দেননি। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে লোকমানের বাড়ির উপর দিয়ে আফিয়া খাতুনের বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ করে দেন এবং তার জমির উপর দিয়ে আফিয়া খাতুনের পরিবারসহ তার পরিবারের লোকজনদের বাধা প্রদান করেন।
অপরদিকে অভিযোগকারী লোকমানের দাদার কাছ থেকে অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারি শিক্ষক হাজী আব্দুর রহমান প্রায় ২০ বছর পূর্বে ২৮ শতক জমি ক্রয় করেন। জমি রেজিস্ট্রির পূর্বে লোকমানের দাদা মারা যান। পরবর্তীতে লোকমানের বাবা ও লোকমান অদ্যাবধি পর্যন্ত জমি হাজী আব্দুর রহমানকে জমিটি রেজিস্ট্রি করে দেয়নি।
উল্লেখ্য, হাজী আব্দুর রহমান লোকমানের বাবা আপন মামা। সর্বোপরি অভিযোগকারী লোকমান, আফিয়া খাতুন এবং হাজী আব্দুর রহমান একই পরিবারের লোক। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ থাকায় তাদের মধ্যে পরস্পর সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এছাড়া লোকমানের বাড়ি সংলগ্ন সরকারি খাল দখল করে অপরপক্ষও লোকমানের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। গতকাল উভয়পক্ষ ও ছোট বহুলা গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। বৈঠকে দু’পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। বৈঠকে লোকমান মিয়া আফিয়া খাতুনের কাছ থেকে ক্রয়কৃত ২ শতক ভূমি ফিরিয়ে দেন।
অপরদিকে হাজী আব্দুর রহমানের ২৮ শতক জমিও রেজিস্ট্রির মাধ্যমে ফিরে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অদ্যাবধি হতে এ নিয়ে উভয়পক্ষ কোন বিরোধে জড়াবেন না মর্মে অঙ্গিকার করেন। অফিয়া খাতুনের বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগে আর বাধা রইল না। সরকারি খাল উদ্ধার হলো।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি সমাজে ছোটখাটো সমস্যাগুলো যদি সমাধান করা হতো তাহলে বড় বড় সমস্যা সৃষ্টি হতো না এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা ও সৃষ্টি হতো না। সমাজের সকলের উচিত ছোটখাটো সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা।