ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ হবিগঞ্জ এর সভাপতি আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী বলেন, গত ১৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট ও সুপারিশগুলোর অনেকগুলো ইসলাম, কুরআন ও সংবিধান বিরোধী সুপারিশ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের এই দেশে ইসলাম ও কুরআন বিরোধী কোন আইন বাস্তবায়ন হতে পারে না। তিনি বলেন, পশ্চিমা শিক্ষা ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত বর্তমান নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের নারীরা কুরআন বিরোধী আইন প্রণয়নের সুপারিশ করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। তাই এই সংস্কার কমিশনটি শুধু বাতিল নয়, এর সাথে জড়িত সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। গতকাল সংগঠনের এক বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, উক্ত কমিশনের সুপারিশে উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারী পুরুষের সমান অধিকার, পুরুষের বহু বিবাহ বন্ধ করণ, যৌনকর্মীদেরকে শ্রমিকের মর্যাদা প্রদান ইত্যাদি সুপারিশগুলো সরাসরি কুরআনের আয়াত বিরোধী। এছাড়া সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদে পতিতাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ নারী কমিশনের সুপারিশে নারীর জন্য সর্বোচ্চ অপমানজনক পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দানের সুপারিশ করা হয়েছে। সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত ‘নারী-পুরুষ’ শব্দদ্বয়ের পরিবর্তে ‘লিঙ্গ পরিচয়’ শব্দদ্বয় অন্তর্ভূক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। যা ঘৃণিত সমকামী, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার তথা এলজিবিটিকিউ মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার দূরভিসন্ধি বলেই মনে হয়। কমিশনের সুপারিশনামায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে- ‘ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইনে নারীর প্রতি বৈষম্য বিদ্যমান’। এর পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবনে স্বাভাবিকভাবে ঘটমান বিরোধের পর স্বামী কর্তৃক শারীরিক সম্পর্ক করতে চাওয়ার বিষয়টিকে তারা ‘মেরিটাল রেইপ’ বা বৈবাহিক ধর্ষণ নামে আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। এসব বর্বর ও হাস্যকর সুপারিশ করে তারা আমাদের দেশের শান্তিপূর্ণ পবিত্র পারিবারিক বন্ধনকে ধ্বংস করে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। নারী কমিশনের সুপারিশনামায় তারা সংবিধানের ২ (ক) অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি চায়। যেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হিসেবে স্বীকৃত।
আল্লামা ওলিপুরী বলেন, আমরা নারী জাতির উন্নয়নের বিরোধী নই। আমরা নারীদের সম্মানজনক অধিকার নিশ্চিতের পক্ষে। পবিত্র কুরআন নারীদের যে অধিকার ও মর্যাদা প্রদান করেছে, এর বাইরে গিয়ে কোন আইন করে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করা যাবে না। আজ যারা তথাকথিত নারী উন্নয়নের সুপারিশ করেছে এরা নারীদের উন্নতি চায় না, নারীদেরকে ভোগের পণ্যে রূপান্তরিত করতে চায়। এই কমিশনের সাথে জড়িত নারী নেত্রীরা এ দেশের নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে না, পশ্চিমাদের টাকা খেয়ে পশ্চিমা নষ্ট সংস্কৃতি এ দেশে বাস্তবায়ন করতে চায়।
সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সালেহ সাদীর পরিচালনায় খাস কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা লোকমান সাদী, সদর শাখার সভাপতি মুফতি সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, পৌর শাখার সভাপতি মহিব উদ্দিন আহমদ সোহেল, খাস কমিটির সদস্য আলহাজ্ব শামছুল হুদা, মাওলানা সাইদুর রহমান, মাওলানা জাবের আল হুদা চৌধুরী প্রমূখ। বিজ্ঞপ্তি
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com