
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার ও থানার ওসির সীল-স্বাক্ষর জাল করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রস্তুতসহ ডিজিটাল জালিয়াত চক্রের সাথে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজেদুর রহমান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার ও থানার ওসিদের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে একটি চক্র ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রস্তুত করে বিদেশগামী যাত্রীদের হয়রানি করে আসছে। গত ২২ এপ্রিল মো: স্বাধীন আহমেদ রবিন নামীয় একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর ফটোকপির উপর তদন্ত করে এ চক্রটিকে আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি ডিবির ওসিকে নির্দেশ দেন। এ প্রেক্ষিতে ডিবির ওসি পুলিশসহ বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন, ঢাকার বনানীতে অবস্থানকারী ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ী মো: সেলিম আহমেদ (হাউজ নং-৫৮, রোড-৭/এ, ব্লক-এইচ, বনানী, ঢাকা) সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের একটি চক্র ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রস্তুত করে আসছে। ওই চক্রের সাথে হবিগঞ্জের একজন প্রভাবশালী নেতা জড়িত রয়েছেন। প্রমাণের অপেক্ষায় আছে পুলিশ। প্রমাণ হাতে এলেই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, হবিগঞ্জ ডিবির এসআই মো: সোহেল রানার নেতৃত্বে একদল পুলিশ গত ২৪ এপ্রিল ভোরে ঢাকা থেকে ডিএমপির অপরাধ ইউনিট, সাইবার ইউনিটসহ পুলিশের বিভিন্ন বিশেষ সংস্থার সহযোগীতায় টানা ৭২ ঘন্টার অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে জালিয়াতি ও প্রতারণার সাথে সম্পৃক্ত মো: সেলিম আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে চক্রের অন্যান্য সদস্য মো: খালিদুর রহমান, মো: রুকুনুর আলম ও মো: সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৬টি মোবাইল ফোন, ১টি হার্ডডিস্ক ও ৫টি পাসপোর্টসহ ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর কপি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ওই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ দেশব্যাপী ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সনদ, সিডিআর সংগ্রহ, সিম লোকেশনসহ নানাবিধ প্রতারণামূলক কাজ করে আসছে। আসামীদের কাছ থেকে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। পুলিশ রিমান্ডে এনে রহস্য উদঘাটন করা হবে। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতরা দেশের বিভিন্ন জেলায় একই ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। অন্যান্য পলাতক আসামীদের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ চলমান রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশ বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হক, অতিরিক্ত সুপার শহিদুল হক মুন্সি, ডিআই ওয়ান কামরুল ইসলাম, ডিবির ওসি একেএম শামীম হাসানসহ পুলিশের কর্মকর্তাগণ।