নওরীন শশী হবিগঞ্জ শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ২০১৬ সালে প্লে শ্রেণিতে লেখাপড়ার সময় থেকে ছবি আঁকার প্রতি সে ঝুঁকে পড়ে। ছবি আঁকার প্রতি তার ঝোঁক দেখে মা-বাবা তাকে বাঁধা দেননি। বরং তারা তাকে এ ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। পিতা-মাতার উৎসাহ পেয়ে সে লেখাপড়ার পাশাপাশি ছবি আঁকা, গান ও আবৃত্তি চর্চা চালিয়ে যেতে থাকে। লেখাপড়ার ফাঁকে সে বিভিন্ন চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেয়। বলতে গেলে সবগুলোতেই সে পুরস্কার লাভ করেছে। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সে লাভ করেছে অসংখ্য বই। বইয়ের স্তুপ দেখিয়ে সে তৃপ্তির হাসি হেসে জানায়, শুধু চিত্রাংকন নয় আবৃত্তিতেও রয়েছে তার পারদর্শিতা। একনাগাড়ে সে বলে যায় ৯ম/১০ম শ্রেণির সুদীর্ঘ কবিতা যা সে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য মুখস্থ করেছে। তার বাচনভঙ্গি ও উচ্চারণ যেকোন শ্রোতাকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম। জাতীয় পর্যায়ে এখনো কোন বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ না পেলেও চলতি বছর খেলাঘর জাতীয় শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ১ম হয়েছে শশী। এ অর্জনের ফলে আগামীতে সেসহ হবিগঞ্জের ৫ জন প্রতিযোগী ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এছাড়াও শশী শিল্পী চ্যারিটি স্মৃতি চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি হবিগঞ্জ, চারু নিকেতন, তারুণ্য সোসাইটি হবিগঞ্জের মেধার লড়াই, রবীন্দ্র নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত প্রতিযোগিতা, শিশু একাডেমি হবিগঞ্জ আয়োজিত শিশু আনন্দ মেলা ও নাট্য উৎসব, জাতীয় শিশু দিবস, জাতীয় শোক দিবস, বাংলা নববর্ষ ১৪২৫/১৪২৬, ২০১৮ সালে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত প্রতিযোগিতায় ‘ক’ বিভাগে অংশ নিয়ে সবগুলোতেই ১ম স্থান লাভ করে। এছাড়া অন্যান্য আরো একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সে ২য়, ৩য় স্থানসহ প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে। বর্তমানে চিত্রশিল্পী শশী নিজেকে আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে চিত্র প্রশিক্ষক তরুণ রায়ের কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তার পিতা মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক এবং মা শামীমা বেগম শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক। শশী অবসর সময়ে টিভি দেখে এবং ছবি আঁকার কাজ করে। তার প্রিয় খাবার মায়ের হাতের তৈরি চিকেন স্যান্ডউইচ ও চিকেন ফ্রাই। প্রিয় ফল ডালিম আর প্রিয় ফুল গোলাপ। আনন্দঘন মুহূর্তে পার্টি ড্রেস পরতেই সে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। মানুষের দুঃখকষ্ট শশীর মনে পীড়া দেয়। তাই সে ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায়। শিশু শশী জানায়, ডাক্তার হলে সকল মানুষের সেবা করা যায়। শশীর এ স্বপ্ন সফল ও সার্থক হোক হবিগঞ্জের মুখ পরিবারের পক্ষ থেকে এ শুভ কামনা রইল।
-মঈন উদ্দিন আহমেদ