
নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ শায়েস্তাগঞ্জে মাদরাসা শিক্ষককে ছুরিকাঘাতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ গোল চত্ত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করা হয়। এতে ব্যাপক জনসমাগমের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ১ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
জামেয়া হুসাইনিয়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা সৈয়দ তানভীর সিফাতুল্লাহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ আকিলপুরী, হবিগঞ্জ দ্বীনি শিক্ষাবোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সালেহ সাদী, বাহুবল কাসিমুল উলুম মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আজিজুর রহমান মানিক, শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, অধ্যাপক ফিরুজুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সারোয়ার রহমান চৌধুরী, প্রভাষক আব্দুল করিম, জেলা জামাতের আমীর মাওলানা মখলিছুর রহমান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আ স ম আফজাল আলী, হবিগঞ্জের আয়না পত্রিকার সম্পাদক এ কে ফয়জুল ইসলাম প্রমূখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে জামেয়া হুসাইনিয়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা সৈয়দ তানভীর সিফাতুল্লাহ বলেন- মাদরাসার ৩১ বছরের ইতিহাসে এমন কোনো কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেনি। কখনো মাদরাসার দিকে কেউ চোখ তুলে তাকানোর সুযোগ পায়নি। যদি আগামী ২৪ ঘন্টার মাঝে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হয় তাহলে সামনে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন- অনতিবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় পরবর্তীতে আরো ব্যাপক আন্দোলন ও কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটায় হিফজ বিভাগের ছাত্র বুরহানের পিতা তাজুল ইসলাম স্বপন তার কিছু সহযোগীকে নিয়ে জামিয়া হুসাইনিয়া শায়েস্তাগঞ্জ মাদ্রাসার ক্লাস চলাকালে কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক হাফেজ মাওলানা সাইফুল ইসলামকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম করেন। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবণতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট রেফার করেন। বর্তমানে তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন আছেন। তাছাড়া হামলার ঘটনায় দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা ও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে আলাপকালে মাদ্রসার পরিচালক মাওলানা সৈয়দ তানভীর সিফাতুল্লাহ বলেন- বুরহান উদ্দিন মাদরাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র। সে অতিরিক্ত দুষ্ট এবং একাধিক বার মাদরাসা থেকে পালিয়ে যায়। শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকেই মাদরাসার আইনকানুন লঙ্ঘন করে আসছে। তার আত্মীয়-স্বজনের অনুরোধে তাকে মাদরাসায় রাখা হয়। কিন্তু এরপরও সে ধারাবাহিক নিয়ম লঙ্ঘন করে যাওয়ায় হিফজ বিভাগের প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা সাইফুল ইসলাম তার ব্যাপারে অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন এবং পরবর্তী বছর তাকে ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে হুজুরের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাবা তাজুল ইসলাম স্বপন ও তার চাচা রিপন মিয়া কয়েক জন সহযোগীকে নিয়ে মাদরাসার ভিতরে প্রবেশ করে মাদরাসা মসজিদের ২য় তলায় ছাত্রদেরকে পবিত্র কুরআন পড়ানো অবস্থায় ওই শিক্ষককে ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।