স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচংয়ের ঐতিহ্যবাহী আদর্শ বাজারের ৩৮ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি গ্রাস করার পায়তারা করছে একটি মহল। এ নিয়ে বাজারের ব্যবসায়ী ও জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী এই সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- বানিয়াচং উপজেলার কামালাখানী মৌজার ৯৬নং জেএল এর এসএ ২৭৩নং দাগে মোট জমির পরিমাণ ছিল ৭৭ শতক। এর মাঝে সরকারের ১নং খতিয়ানে ৩৯ শতক এবং ৩৪৪ নং খতিয়ানে কোর্ট অন ওয়ার্ডস পক্ষে মনোয়ার বক্ত মজুমদার গং এর নামে ৩৮ শতক রেকর্ড হয়। সরকার ৩৯ শতক ভূমি ১৯৯৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১১৩৭ নং বন্দোবস্ত দলিলমূলে জনৈক সুলতান উল্ল্যা বরাবর হস্তান্তর করলেও এই জমিতে আদর্শ বাজারে রূপান্তর হয়। কিন্তু আরএস জরিপ আসলে জরিপ কর্মকর্তাকে ভূল বুঝিয়ে ৩৪৪ নং খতিয়ানের ৩৮ শতক ভূমি বানিয়াচংয়ের ৩নং হাবেলীর মনোয়ার বক্ত মজুমদারের ১ ছেলে এইচ এম হামিদ বক্ত মজুমদার ও ১ মেয়ে মেহেরুন নেছা খাতুনের নামে বেআইনীভাবে রেকর্ড করানো হয়। কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর সম্পত্তি আদালতের অনুমতি ছাড়া হস্তান্তরের বিধান না থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের কিছু লোককে সাথে নিয়ে জরিপ কর্মকর্তার মাধ্যমে এই বেআইনী রেকর্ড করানো হলেও জমিতে কেউ প্রবেশ করতে পারেনি। সেখানে আদর্শবাজারের বাঁশ ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে আসছেন। প্রভাবশালী মহল কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ওই এলাকার এসএম আলী আক্কাছ ও ইকবাল বাহার নামে দুই ব্যক্তিকে বাদী সাজিয়ে তাদের পিতা-মাতা ও ভাইবোন ১৪ জনকে ২য় পক্ষ করে হবিগঞ্জ আদালতে স্বত্ব মামলা দায়ের করেন। পরে ২য় পক্ষ সোলেনামা প্রদান করলেও বিজ্ঞ আদালত ২০১১ সালের ২৯ মে তারিখে মামলাটি খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে বাদী পক্ষ স্বত্ব আপীল ১৭৩/১১ দায়ের করেন। যা এখওন বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে এইচএম হামিদ বক্ত মজুমদার আদালত থেকে কোন প্রতিকার না পেয়ে এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোককে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে যোগাযোগীমূলে সৃষ্ট আরএস রেকর্ড দিয়ে জমিটি বিক্রির পায়তারা করছেন। এই খবর জানতে পেরে এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
আদর্শবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মসলন্দ আলী সর্দার বলেন- এই জমিতে আদর্শ বাজার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে মাতাপুর মহল্লার যুব সমাজ খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহার করতেন। বাজারের স্থান সংকুলানের সুবিধার্থে এলাকাবাসী এটিকে মাঠ হিসাবে ব্যবহার না করে বাজারের জন্য ছেড়ে দেন। ফলে বাজারে সহজেই ক্রেতা-বিক্রেতা সমাগম ঘটে এখানে। কেউ চাইলেই এই সম্পত্তি গ্রাস করতে পারবেন না। যে কোন মূল্যে আমরা এই জমি ও বাজার রক্ষা করব। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বানিয়াচংয়ের সাবরেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন বলেন- কোন জমি রেজিস্ট্রি করার সময় সকল রেকর্ড যাছাই করা হয়। যদি কোন জমিতে সরকার ও জনস্বার্থের বিষয় থাকে এবং আদালতে মামলা থাকে তখন কোন জমির রেজিস্ট্রি হবে না।
হবিগঞ্জের বিজ্ঞ জিপি অ্যাডভোকেট খায়রুল ইসলাম খোকন বলেন- আদর্শ বাজারের জমি নিয়ে নি¤œ আদালতের রায় রয়েছে। এখনও আপীল চলমান। এই আপীল মোকদ্দমা শেষ না হলে জমি বিক্রি করা যাবে না।