মোঃ মামুন চৌধুরী ॥ শিলাবৃষ্টি জনিত কারণে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় সরকারি হিসেবে প্রায় ১১০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ও ২৪ হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ভারী বাতাসে ক্ষেতে রোপা আমন ধান হেলে পড়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: আকতারুজ্জামান শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমি পরিদর্শন করে কৃষকদের সাথে কথা বলেন।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে শিলাসহ বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এতে ভেঙে গেছে গাছপালা, বাসাবাড়ি ও গাড়ীর কাঁচ। বৃষ্টির পর দেখা গেছে রাস্তা ও বাসাবাড়ির আঙ্গিনায় শিলাবৃষ্টির স্তূপ। শিলাবৃষ্টির সাথে ধমকা হাওয়ায় ক্ষেতের রোপা আমনের ধান, নানা ধরণের সবজির ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, নানা স্থানে ঘরবাড়ির টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
উপজেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মিজানুর রহমান সুমন বলেন, শিলাবৃষ্টিতে তারসহ বিভিন্ন লোকজনের ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে ফসলের।
বিরামচর গ্রামের কৃষক সুজন মিয়া জানান, হঠাৎ করে ঝড়ো হাওয়ার সাথে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। এতে তার ক্ষেতে চাষকৃত লাল শাক একেবারে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বেগুন ক্ষেতেরও। এসব চাষে তার প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। নতুন করে চাষ করার মতো টাকা তার কাছে নেই। এ অবস্থায় তিনি বিরাট হতাশায় রয়েছেন।
কদমতলী গ্রামের কৃষক আহমদ আলী জানান, তার ক্ষেতের রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় তিনি কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। আহমদ আলী ও সুজনের ন্যায় অন্যান্য কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষেতে পুনরায় ফসল চাষ করার জন্য তারা সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক গাছ ভেঙে গেছে। শিলাবৃষ্টির প্রভাবে ভেঙেছে বিভিন্ন গাড়ীর কাঁচ। ভেঙেছে বাসার জানালার কাঁচও।
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: আকতারুজ্জামান বলেন, বোরো ধানের মৌসুমে সাধারণত শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে। এবার আমনের মৌসুমে অসময়ে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে এতে রোপা আমনের তেমন একটা ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। তারপরও কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com