বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তকবীর আহতের ঘটনা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তকবীর নামে এক যুবক আহতের ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মন্দরী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হক, খাগাউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ কুরাইশী মক্কী, মুরাদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পাশাসহ আওয়ামীলীগের ৫৪ জন নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কগ-৪) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন আহত তকবীর মিয়ার মা বানিয়াচং উপজেলা সদরের রঘু চৌধুরীপাড়া গ্রামের ইসমাইল মিয়ার স্ত্রী ফুলবাহার বেগম। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বানিয়চং থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- আওয়ামীলীগ নেতা মুশফিকুর রহমান, ৪নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মাহমুদ বিশ্বাস, ইকবাল হোসেন ইনু, ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মুত্তাকিম বিশ্বাস, রিয়াজ উদ্দিন, ছায়েব আলী, হামিদ মিয়া, শামিম মিয়া, আব্দুল কাইয়ূম, নাবিল মিয়া, ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাস, জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রিয়তোষ রঞ্জন দেব, সাইদুর মিয়া, মুনসুর মিয়া, মিজানুর রহমান, মুরাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ আলী, ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ, ইউপি চেয়ারম্যান শামরুল ইসলাম, কাউছার আহমেদ বিপুল, আছাবুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা রজব আলী, ছাত্রলীগ নেতা তারেক মিয়া, আওয়ামীলীগ নেতা অলি মিয়া, সাবাজ মিয়া, আওয়ামীলীগ নেতা আরজু মিয়া, ওয়েছ মিয়া, মাহমুদ মিয়া, জুয়েল মিয়া, মহিবুর রহমান, শিলু মিয়া, মোস্তফা মিয়া, জহিরুল মিয়া, উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক ঠাকুর, আজিজুল মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, শাহীন মিয়া, হেলাল উদ্দিন, কাউছার মিয়া, জ্যোতি বিকাশ দাশ (ছোটন), আজিজুর রহমান, সাবাজুল হাসান মিয়া, দুলাল মিয়া, তৌহিদ মিয়া, জহির মিয়া, শিপন মিয়া, নাসির মিয়া, ফরহাদ মিয়া।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন- গত ৫ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে বানিয়াচং উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন। ওইদিন আন্দোলনকারীদের ডাকে সাড়া দিয়ে আমার ছেলে তকবীর আন্দোলনে যায়। আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে মিছিল করে। মিছিলটি হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের ঈদগাহের রাস্তার সামনে আসলে পূর্ব থেকে নন্দীপাড়া গ্রামের রাস্তায় ওৎ পেতে থাকা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী মামলার ৭নং আসামী মোত্তাকিম বিশ্বাসের নির্দেশে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, পেট্রোল বোমাসহ গোলাবারুদ নিয়ে আন্দোলকারীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীদের হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে তাদের উপর গুলি ছুড়ে। শুধু গুলিই ছুড়েনি তারা বিভিন্ন ধরণের ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় ১নং আসামী মুশফিকুর রহমানের হাতে থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়লে বাদীর ছেলে তকবীর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। ২নং আসামীর আনোয়ার হোসেনের গুলির আঘাতে সৌরভ নামের আরেকজন আহত হন এবং ৪নং আসামী রফিকুল ইসলাম পাশার হাতে থাকা অগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে হোসাইন আহমেদ নামে আরেকজন গুলিবিদ্ধ হন। বাদী মামলায় উল্লেখ করেন গুরুতর আহত অবস্থায় তার ছেলে তকবীরকে প্রথমে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল নিয়ে আসা হয়। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করেন।
মামলার বাদী ফুলবাহার বেগম জানান, আমার ছেলের উপর যারা হামলা করেছে আমরা এর সঠিক বিচারের জন্য মামলা করেছি। আশা করি আদালত এর সঠিক বিচার করবেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com