এসএম সুরুজ আলী ॥ খোয়াই নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে শত বছরের পুরনো গ্রাম রাধাপুর। সম্প্রতি খোয়াই নদীর পানি বিদপসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এর স্রোতে গ্রামের কয়েকটি বসতঘর ভেঙ্গে যায়। এর ফলে গ্রামবাসীসহ আশ-পাশের এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের রাধাপুর খোয়াই নদীর বাধের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। শত বছরে পুরনো গ্রামটিতে ২ শতাধিক পরিবারের জনসংখ্যা প্রায় ১ হাজারেরও বেশি। প্রতি বছর বর্ষা মওসুমে নদী ভাঙ্গনে পড়ে গ্রামটি। ইতিপূর্বে স্কুল, মসজিদসহ ২০/২৫টি বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। বর্তমানে গ্রামের সামনে নদীর বাধ প্রায় ১ হাজার মিটার এলাকায় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে অনেকটা আতংকে মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী। রবিবার নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে গ্রামবাসী। এতে গ্রামবাসী অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় গ্রামটি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন তারা।
গ্রামের সাবেক মেম্বার জিতু মিয়া প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে নদী বাধ ভেঙ্গে গ্রামবাসী অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দিন দিন ভাঙ্গন শুধু বাড়ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গন রোধে এ ধরণের কোন প্রকল্প গ্রহন করেননি। শুধু একবার কিছু বস্তা দিয়ে মাটি ফেলা হয়েছিল। এরপর আর কোন প্রকল্প দেওয়া হয়নি। খোয়াই নদীতে পানি বাড়লেও রাধাপুর গ্রামবাসী আতংকে থাকেন। শুধু রাধাপুর নয়, আশ পাশের গ্রামগুলোতে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ রাধাপুর গ্রাম দিয়ে বড় ধরণের ভাঙ্গন দিলে আশেপাশের গ্রামগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। হাওরে জমিগুলো পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাবে। এতে জমিগুলোতে ধান চাষ করা যাবে না। এমনিতেই পাশ্ববর্তী বড়কান্দি এলাকায় নদীর বাধ ভেঙ্গে কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি অবিলম্বে বাধ সংস্কার করে রাধাপুর গ্রামবাসীকে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার দাবি জানান। গ্রামের বাসিন্দা নজির মিয়া জানান, ইতিপূর্বে গ্রামের স্কুল, মসিজদসহ অনেক বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। এখন আবারও নদী ভাঙ্গন বেড়ে গেছে। গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি বাড়ি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। যাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে তারা কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। রাধারপুর গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রকম আলী জানান, গ্রামের প্রায় ১হাজার মিটার জায়গা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় নদী ভাঙ্গন রক্ষার জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। এ প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি এসে নদী ভাঙ্গনের স্থান পরিদর্শন করেছেন। তারা আমাদের প্রকল্প গ্রহনের জন্য আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ এর সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি জানান, বাধ রক্ষায় প্রকল্প গ্রহন করা হবে। এখন সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে খোয়াই নদীতে পানি কমে যাওয়ায় আশা করি আর তেমন ক্ষতি হবে না।