হবিগঞ্জে এনার্জি রেগুলেটারী কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ
পুরাতন খোয়াইকে দখলদার থেকে মুক্ত করতে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেছেন- হবিগঞ্জের সার্বিক উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত করে জন্মস্থানের ঋণ শোধ করতে চাই। পুরাতন ও প্রবাহমান খোয়াই নদীর সমস্যাগুলো সমাধানে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের নিকট থেকে অর্থ বরাদ্দে যতটুকু ভূমিকা রাখা দরকার সবই করবো।
সোমবার দুপুরে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজিত ‘খোয়াই অববাহিকায় বন্যা ও জলাবদ্ধতাঃ কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি ছাত্র জীবনের কথা স্মরণ করে বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে খোয়াই নদীকে আমরা শহর থেকে সরিয়ে ছিলাম। নদী সরে গেলেও সমস্যা কমেনি। পুরনো খোয়াইকে দখলদার থেকে মুক্ত করতে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। বালু মহাল ব্যবস্থাপনা খুবই জটিল বিষয়। যারা ইজারা নেন তারা রাজনৈতিকভাবে খুবই শক্তিশালী। ফলে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তিনি নদীর সীমানা নির্ধারণ করে পিলার স্থাপন, সৌন্দর্যবর্ধনে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য প্রচেষ্টা চালাবেন বলে আশ্বাস দেন।
বিশিষ্ট পরিবেশ সংগঠক ও কবি তাহমিনা বেগম গিনির সভাপতিত্বে ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেলের সঞ্চালনায় ওই সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ সংগঠক, বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইকরামুল ওয়াদুদ, পুলিশের ডিআইজি এজাজ আহমদ, ডেপুটি এটর্নী জেনারেল ফয়েজ আহমদ, বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ইলিয়াস বখত চৌধুরী জালাল, সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহান আরা খাতুন, হবিগঞ্জ বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল হাসান শরীফ, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি রাসেল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি শোয়েব চৌধুরী।
ডেপুটি এটর্নী জেনারেল ফয়েজ আহমদ বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নদী একটি জীবন্ত সত্তা। মানুষের যে অধিকার আছে নদীরও সে অধিকার রয়েছে। নদী নিয়ে আদালত, প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড আলাদাভাবে কাজ করে। ইউনিফাইড কোন বডি নেই। বন্যা থেকে শহরকে রক্ষা করতে হলে ড্রেজিং করা প্রয়োজন।
ডিআইজি এজাজ আহমদ বলেন, সিএস রেকর্ড অনুযায়ী পুরাতন খোয়াই নদীর সীমানা চিহ্নিত করতে হবে।
বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইকরামুল ওয়াদুদ বলেন পুরাতন খোয়াই সংস্কার করে দৃষ্টি নন্দন করা হোক সবাই চায়। প্রবাহ খোয়াই নদীর ও বন্যা নিয়ন্ত্রনে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিতে হবে।
মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জাহান আরা খাতুন বলেন, হবিগঞ্জের প্রাণধারা নদীতে বহমান। এ যেন নয়নের মাঝে নয়নের পাতা। তাই খোয়াই নদীকে উদ্ধার করা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক আব্দুল হালিম, সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন, অ্যাডভোকেট হাসবী সাঈদ চৌধুরী, বাহার উদ্দিন, রায়হান মিয়া, আব্দুল ওয়াহেদ, আশরাফুল বারি তানভীর, মহিউদ্দিন রিপন, মহসিন চৌধুরী, মো: বাহার মিয়া, এনাম আহমদ, আলভিনা আহমেদ, কৃষিবিদ বীরেন্দ্র লাল রায়, আ: মতিন, শফিকুল ইসলাম, মো: রায়হান, আ: ওয়াহেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন প্রবাহমান খোয়াই নদীতে ঢল নামলে আতংকে শহরবাসীর ঘুম আসে না। নদীর বুক শহর থেকে ১৬ ফুট উপরে উঠে গেছে। এ জন্য ড্রেজিং বা বিকল্প পদ্ধতিতে নদীর তলদেশ খনন করতে হবে। এর আগে খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল ‘খোয়াই নদীর বন্যা ও জলাবদ্ধতা- কারণ ও করনীয়’ সম্পর্কে একটি ধারণাপত্র উপস্থাপনা করেন।