স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মোস্তাক আহমেদ (২৫) হত্যার ঘটনায় হবিগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরসহ ১১১ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা রুজু হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
গতকাল বুধবার বিকাল ৪টার দিকে এসএম মামুন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরুল আলম। গত মঙ্গলবার রাতে এই মামলার এজাহার দায়ের করা হয়েছিল। নিহত মোস্তাক আহমেদ সিলেটের জালালাবাদ থানার বউরিপুর এলাকার আবদুল কাদিরের ছেলে। তিনি হবিগঞ্জে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করতেন। মামলার বাদী এসএম মামুন হবিগঞ্জ পৌর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক। তিনি জানিয়েছেন, নিহতের পরিবারের সম্মতি নিয়ে তিনি এ মামলায় বাদী হয়েছেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিউল আলম আজাদ, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, বানিয়াচং উপজেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বানিয়াচং উপজেলার মন্দরী ইউপির চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হক, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ রাজ, শাহ নেওয়াজ, পৌর আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর সোহাগ, মক্রমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল আজাদ রাসেল, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন আহমেদ সুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফয়জুর বশির চৌধুরী সুজন, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্ত টিটুসহ ১১১ জন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের কোর্ট মসজিদের সামনে অবস্থান নেন। পরে তারা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। শহরের টাউন হল এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। এ সময় মোস্তাক আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।