ডাঃ চৌধুরী মোঃ নিয়াজুজ্জামান
শিশু বিশেষজ্ঞ
কনসালট্যান্ট (শিশু বিভাগ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার: প্রতি শুক্রবার মধুমতি ডায়াগনস্টিক সেন্টার
জে.কে. স্কুল মার্কেট, হবিগঞ্জ।
২১) বাচ্চার মুখে চুষনি বা প্যাসিফায়ার দিবেন না। এতে বাচ্চার ইনফেকশন এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
২২) কান্না বেশি করলে কেউ কেউ বাচ্চাকে ফেনোবারবিটোন জাতীয় খিচুনির ঔষধ খাওয়াতে দেখা যায়। এতে বাচ্চার ক্ষতির কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন উপদেশ ফলো করা ও শিশু বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ অনুযায়ী অন্যান্য ঔষধ সেবন করাই বেটার হবে।
২৩) ধূলাবালি ধোয়া ও ময়লাযুক্ত পরিবেশ এড়িয়ে চলবেন।
২৪) নবজাতকের স্কিনে বিভিন্ন র্যাশ হতে পারে, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক। তথাপি সন্দেহ হলে চিকিৎসক এর পরামর্শ নেয়াই শ্রেয়।
২৫) ডাক্তার না দেখিয়ে ফার্মেসি থেকে ঔষধ নেয়া বাচ্চার মারাত্বক ক্ষতির কারণ হতে পারে, যা অনেকেই করে থাকেন। সবসময় চেষ্টা করবেন কোন শিশু বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিতে। কারণ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ওজন অনুযায়ী ঔষধ এর ডোজ নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
২৬) অনেক পরিবারে মাকে বিভিন্ন খাবার না খাওয়াতে দেখা যায় বাচ্চার অসুখ হবে এই ধারণা থেকে, যা ভুল। বরং মায়ের মাছ, মাংস সহ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া বাচ্চার বুকের দুধ পেতে সহায়ক।
২৭) কটন বাড দিয়ে নবজাতকের কান খোঁচানো নিষেধ।
২৮) কুসুম গরম পানিতে গোসল করাবেন দুপুরে। সকালে বা বিকালে করাবেন না। বাসার ভিতরে অর্থাৎ বাথরুম এ গোসল করাবেন; বারান্দায় করাবেন না। এতে বাতাসে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। গোসলের পর সাথে সাথে মাথাসহ পুরো শরীর ভালমতো মুছিয়ে কাপড় পরিয়ে দিবেন।
২৯) নবজাতক অনেক বেশি সময় ঘুমাবে, এতে ভয়ের কিছু নেই।
৩০) পিঠের উপর বা একটু ডানদিকে কাত করে বাচ্চাকে শক্ত বিছানায় ঘুম পারানো উচিত। নরম বিছানায় উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনাক্রমে শ্বাসরোধ হতে পারে।
৩১) সরাসরি ফ্যানের নিচে বা এসির নিচে বাচ্চাকে ঘুমাতে দিবেন না।
৩২) বাচ্চার নখ ছোট রাখবেন।
৩৩) নিউবর্ন স্ক্রিনিং এর জন্য প্রত্যেক বাচ্চার ৫ম থেকে ১৪তম দিনের মধ্যে থাইরয়েড হরমোন লেভেল চেক করা উচিত। এতে পরবর্তীতে হাইপোথাইরয়েডিজমজনিত মানসিক প্রতিবন্ধিতা থেকে বাচ্চা রক্ষা পেতে পারে। কোন কারণে নির্দিষ্ট সময়ে মিস হলেও যতো দ্রুত সম্ভব করিয়ে ফেলা ভালো হবে।
৩৪) বৃদ্ধি বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেজন্য প্রথমদিকে মাসে ১ বার ও পরে ৩ মাসে অন্তত একবার শিশু বিশেষজ্ঞ এর কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।
৩৫) ২ বছর পর্যন্ত রোটাভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার সংক্রমণ এড়াতে জড়ঃধৎরী ঠধপপরহব বাচ্চার মুখে খাওয়াতে পারেন। এর ২টি ডোজ। ১ম ডোজ ১.৫ মাস থেকে ৩ মাস বয়সের মধ্যে খাওয়ালে ভালো। আর প্রথম ডোজ খাওয়ানোর কমপক্ষে ১ মাস পর আরেকটা ডোজ খাওয়াতে হয়। ৬ মাসের মধ্যে ২টি ডোজ কমপ্লিট করতে হয়। যদি জড়ঃধৎরী না পাওয়া যায়, তাহলে এর বদলে আরেকটি ভ্যাক্সিন জড়ঃধঃবয় খাওয়াতে পারেন। এর ৩টি ডোজ; দেড় মাস থেকে শুরু করা যাবে এবং কমপক্ষে ১ মাস পরপর মুখে খাওয়াতে হয়। ৩২ সপ্তাহ বয়সের মধ্যে অর্থাৎ মোটামুটি ৭ মাস ১০ দিন বয়সের মধ্যে ৩টি ডোজ কমপ্লিট করতে হবে।
৩৬) বাচ্চার ঠান্ডা লাগাবেন না। বাচ্চার প্র¯্রাব এর প্রতি খেয়াল রাখুন ও প্র¯্রাব করলে কাপড় দ্রুত চেঞ্জ করে দিন।
৩৭) বাচ্চাকে তাবিজ পরানো বা ঝাড়ফুক বাচ্চার ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৩৮) ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বলে ১ মাস বয়স পর্যন্ত নবজাতকের চুল না কাটাই বেটার হবে।
৩৯) শিশুকে ভিটামিন কে ইঞ্জেকশন মুখে খাওয়াবেন ৩টি ডোজ। (রুল অব ফোর) ১ম ডোজ জন্মের ৪ ঘন্টা পর (অনেকে জন্মের সাথে সাথেই বুকের দুধ দেয়ার আগেই খাইয়ে দেন, যা উচিত নয়); ২য় ডোজ ৪র্থ দিনে এবং ৩য় ডোজ ৪ সপ্তাহ (২৮তম দিনে) বয়সে। উল্লেখ্য, মুখে না খাইয়ে শিরায়/মাংসে ইঞ্জেকশন এর মাধ্যমে দেয়া হলে হাফ এম্পুল একটি ডোজই যথেষ্ট।
৪০) জন্মের পরপরই ৭.১% ক্লোরহেক্সিডিন নামক ঔষধটি বাচ্চার নাভীতে দিতে হয়। এরপর নাভীতে আর কিছু ব্যবহার করা নিষেধ।